Finland Education কেন বিশ্বসেরা জেনে নিন

Finland Education

Finland Education কেন বিশ্বসেরা জেনে নিন

ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা কেন বিশ্বসেরা || Finland Education System . ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমান বিশ্বের সেরা শিক্ষা ব্যবস্থা। পৃথিবীর সকল দেশই শিক্ষার জন্য অনেক বেশি সচেতন। আমেরিকা, কানাডা, ব্রাজিল, ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও অনেক ভালো।

আরো পড়ুন>> Good Student বা ভালো ছাত্র হওয়ার কৌশল জেনে রাখুন

২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে ফিনল্যান্ডের অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। সেই সময়ে ৬০ হাজার ফিনিস সৈন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।
 
আর সেই যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো শিক্ষাব্যবস্থার দাবী রাখছে। পুরো পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো শিক্ষাব্যবস্থা কোনটা বলতে বললে চোখ বন্ধ করেই উত্তর বলা যাবে সেই দেশটার নাম ফিনল্যান্ড। আত্মরজার্তিক মহলেও সাড়া ফেলেছে এই দেশের শিক্ষাব্যবস্থাটা।
 
প্রাথমিক শিক্ষার জন্য এই দেশের ফিনিস শিশুরা ৭ বছর বয়সে স্কুলে যায় আর ৬ বছর পর্যন্ত এদেরকে বিদ্যালয়ের অনুপযোগী হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা কেন বিশ্বসেরা

আয়তন ৩,৩৮,৪২৪ বর্গকিলোমিটার পুরো পৃথিবীর মধ্যে ৬৪তম। এই দেশকে হৃদের দেশও বলা হয়। এখানে অনেক ছোট ছোট দ্বীপও আছে। এত বড় একটা দেশ অথচ জনসংখ্যা মাত্র ৫০ লক্ষ।

অথচ আমাদের দেশ বাংলাদেশ যার আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার যার জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটিরও বেশি। জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর ১১৪ তম দেশ ফিনল্যন্ড। জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে অবস্থান ২১৩তম। খ্রিষ্ঠান ধর্মের লোক বেশি বসবাস করে এই দেশটিতে। 

আরো পড়ুন>> বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করার উপায় জেনে নিন

১৯১৭ সালে এই দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করে রাশিয়ার কাছ থেকে। ফিনল্যান্ডের পাশেই সুইডেন দেশটির অবস্থান। ফিনিস ও সুইডিশ এই দেশের প্রধান ভাষা। এই দেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ৫০ হাজার ডলারেরও বেশি আর ১৪ তম অবস্থান পুরো পৃথিবীতে।

এখানকার মুদ্রা হলো ইউরো। গ্লাস উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত একটি দেশ হিসেবে পরিচিত এই ফিনল্যান্ড এছাড়াও ইউরোপের জাহাজ নির্মানের দেশ হিসেবে দেশটি পরিচিত। 

দেশটিতে শিক্ষার হার ৯৯% অর্থ্যৎ প্রতি ১০০ জনে ৯৯ জনই শিক্ষিত। এদের শিক্ষাব্যবস্থা ১৯৭০ সাল থেকে একইভাবে চলছে।

যেখানে ১ বছর প্রাক-প্রাথমিক ও ৯ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতা মূলক। আমরা আজকে যেই ইন্টারনেট ব্যবহার করছি সেটা কিন্তু এই ফিনল্যান্ড নামক দেশটির কারণেই।

এখানেই ইন্টারনেট ও ব্রাউজারের ধারণা প্রথম আসে। এই দেশের পাসপোর্ট পৃথিবীর মধ্যে ২য় অবস্থানে। এই দেশের পাসপোর্ট ধারীদেরকে পৃথিবীর অনেক দেশেই সহজেই ভ্রমন করতে দেওয়া হয়।

শিক্ষাব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত হলেও অন্যন্যা প্রযুক্তির জিনিসপত্রও এই দেশটিতে কম নয়। 

আরো পড়ুন>> SSC All Subject Suggestion – SSC সকল বিষয়ের সাজেশান

 পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যদি আপনি জানতে চান তাহলে আপনাকে গুগল বা বিভিন্ন সার্চ ইজ্ঞিন প্রথমেই যে নামটা দেবে সেটাই হলো ফিনল্যান্ড।

এখানেই দেওয়া হয় বিশ্বসেরা শিক্ষা যা বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। আমরা অনেকেই জানি না আসলে কেমন তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বা কেমন ভাবেই তারা শিক্ষা দেয় যার কারণে তাদের শিক্ষা পৃথিবীর বিশ্বসেরা। আজকে এই আর্টিকেলটিতে এটাই আলোচনা করা হবে।

 ডে-কেয়ার সিস্টেম

আমাদের দেশে এই সিস্টেমটা তেমন পরিচিত না তবে ফিনল্যান্ডে আপনি আপনার বাচ্চাকে ৯ মাস বয়স থেকেই ডে-কেয়ারে দিতে পারবেন।
 
একটা পরিবারের মা ও বাবা যখন দুইজনই চাকরী করেন তখন তারা তাদের বাচ্চাকে ডে-কেয়ারে রেখে চাকরীতে যেতে পারবেন। এবং ডে-কেয়ারে একটা ব্যাচে ১৭টি বাচ্চা থাকে। এখানে ছোট থেকে আত্মবিশ্বাসী ও আত্মনির্ভরশীল হওয়াটাকে শেখাতে থাকে।
 
যেমন, একটা বাচ্চা নিজের পোশাক কিভাবে গুছিয়ে রাখবে, সে তার খাবার নিজেই কিভাবে খাবে তারপর আরও যেসব বিষয় সে নিজেই চেষ্টা করলে পারবে সেটা এখানে ডে-কেয়ারগুলোতে শেখানো হয়।

আরো পড়ুন>> Dialogue Between Two Friends About Physical Exercise
 
উন্নত দেশে মনে করা হয় তাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আপনি যদি বেশি অর্থ যোগান দিতে পারেন তবে সেখানে অনেক ভালো শিক্ষক ও ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব।
 
পরিবারের মা ও বাবা যখন চাকরী করবে তখন উভয়ই অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে। এই বিষয়টার জন্যই সরকার এই শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছেন।
 
কারণ কর্মজীবিরা যেন কর্ম করতে আগ্রহী হয় এবং তারাও যেন দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে সেটাই এই ধরনের সিস্টেমের মূল লক্ষ্য।
 
কিছুদিন আগে আমাদের দেশের একজন ডে-কেয়ার প্রতিষ্ঠাতার একটি সাক্ষ্যৎকার নেওয়া হয়েছিল তিনি বলেন, “আমাদের দেশে এই সিস্টেমটা কম আর একটা বাচ্চা যখন শুধু বাসায় একটা জায়গাতেই থাকতে থাকতে তখন সে নিজের কাজগুলো করতে আগ্রহী হয় না।
 
অথচ একসাথে অনেক গুলো বাচ্চার সাথে থাকলে সে আরেকজনের দেখে দেখে অনেক কিছু উৎসাহ নিয়ে করতে আগ্রহী হয়।
 
আর এই বিষয়টা অনেক কার্যকরী বলেও তিনি মনে করেন। বাচ্চাদের কিভাবে আনন্দ দিয়ে নিজের কাজের প্রতি উৎসাহী করা যায় সেই বিষয়গুলো আগে থেকেই যিনি দায়িত্বে থাকেন তাকে শেখানো হয়।” 
 

আসলে এটা অনেক ভালো একটা পদ্ধতি যেখানে একটা বাচ্চা ছোট থেকেই শিক্ষাপ্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে।
 
সে তার আশেপাশের পরিবেশটা এমন দেখে যেখানে সবাই শেখার বা শিক্ষার সাথে যুক্ত আর এভাবেই ছোট থেকে কিভাবে সে নিজের কাগুলো করার মাধ্যমে শিখবে তা শেখার ব্যবস্থা করানো হয়।
 
পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও কিন্তু অনেক শেখার জায়গা আছে। আমাদের দেশে মনে করা হয় বই পড়া মানেই শেখা আসলে নিজেকে একটা আত্মনির্ভরশীল ব্যাক্তি বানানোর জন্য বাস্তব কিছু উদাহারণ যেটা বই পড়ে আসে না। এসব বিষয়গুলো প্রাকটিক্যালী দেখানোর জন্যই এই ডে-কেয়ারের সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন>> Completing Sentence Suggestion For SSC

আপনার অফিসের সময় অনুসারেই হয়ে থাকে ডে-কেয়ারের সময়সূচী।

যেমন আপনার অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা আপনি ইচ্ছে করলে এই সময়ের মধ্যে যে কোন সময় রাখতে পারবেন। আর এখানে খাবারের ব্যবস্থাও থাকে ফিনল্যান্ডে।

সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও বিকেলে Snack Food এর সুন্দর ব্যবস্থা করা হয় সেখানে। এর মাঝখানে ‍দুপুরের দিকে বাচ্চারা ঘুমায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। ডে-কেয়ারে সেই সকল বাচ্চাদেরকেই রাখা হয় যাদের মা ও বাবা দুইজনই চাকরী করেন।

আর এখানে আরও অনেক বাচ্চা থাকার কারণে বাচ্চারা হাসিখুশিও থাকে ভালো। এখানে আসলে খরচটা নির্ভর করে মা ও বাবার আয়ের উপর ভিত্তি করে। আপনি ফুল টাইম রাখতে পারবেন আর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রাখতে পারবেন সেটার উপর নির্ভর করে খরচের হিসেব করা হয়। সাধারণত ১ বছর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ডে-কেয়ারে রাখা হয় ফিনল্যান্ডে। ফিনল্যান্ডের ডে-কেয়ারে দুইটা গ্রুপে বাচ্চারা থাকে।

১ম গ্রুপে ১ থেকে ৩ বছরের বাচ্চারা থাকে আর ২য় গ্রুপে ৩ থেকে ৫ বছরের বাচ্চারা থাকে। এটা করা হয় যেন বাচ্চারা তাদের বয়স অনুসালে খেলাধূলা করতে পারে।

ছোট বড় একসাথে থাকলে অনেক সময় ছোটরা খেলাধূলার সুযোগ কম পায় বিধায় এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেকটা গ্রুপে সর্বোচ্চ্য ১৭টা বাচ্চা থাকে। এই ১৭টা বাচ্চা দেখাশোনা করার জন্য ৩ থেকে ৪ জন করে শিক্ষক থাকেন। এই তিনজন বা চারজনই তাদেরকে দেখাশোনা করানো খাওয়া-দাওয়া করানো সব কাজই করে থাকেন।

তাদের পরিস্কার করা বা তাদেরকে প্রয়োজন মত যা যা করা দরকার যেমন, ছোট বাচ্চাদের ডায়পার পরিবর্তন সবকিছুই তারা করে থাকেন। এখানে মা ও বাবার কোন চিন্তা করতে হয় না।

ডে কেয়ারের পরে ওদেরকে প্রি-স্কুলের ব্যবস্থা করা হয়। এটার বয়স ৬ বছর। ৬ বছর থেকেই তাদেরকে প্রি-স্কুলে পাঠানো ও পড়াশোনার সাথে যুক্ত করা হয় ফিনল্যান্ডে।

প্রি-স্কুল সম্পর্কে যদি বলি তবে ফিনল্যান্ডে কি করা হয় সেটা বলছি। ওখানে প্রি-স্কুলে কিন্তু বেশি পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকে না। ওখানে আপনার বাচ্চা স্কুলে গিয়ে কি করবে বা কিভাবে তারা স্কুলে যাওয়ার প্রতি আগ্রহী হবে সেটা শেখানো হয়। এখানে হয়তো সামান্য কিছু যেমন বর্ণমালা শেখানোর ব্যবস্থা থাকে। যেটা ওরা ৬ বছর থেকে ৭ বছর বয়সে শেখানোর ব্যবস্থা করে থাকে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হলো আপনি আপনার বাচ্চাকে প্রি-স্কুল বা ডে-কেয়ারে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন আপনি আপনার বাচ্চার বয়স ৯ মাস হওয়ার পর কোন ডে কেয়ারে দেবেন সেটা কিন্তু আপনাকে সিটি কর্পোরেশান বা কাউপঙ্গি (ফিনল্যান্ডের ভাষায়) যেটা আমাদের দেশে প্রচলিত ওখানে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে হয়।

তখন আপনার বাসায় আশে-পাশে কোথায় আছে সেটা দেখে রাখার ব্যবস্থা সরকারীভাবেই করা হয়। ফিনল্যান্ডে আপনি আপনার বাচ্চা ডে-কেয়ার বা প্রি-স্কুলে দেওয়ার জন্য কোন পরীক্ষা সম্মুখীন হতে হয় না যেটা আমাদের দেশে দেখা যায়।

ওখানকার সকল ডে-কেয়ারের সিস্টেম একই তাই আপনি কোন চিন্তা ছাড়াই যে কোনটাতে অর্থ্যৎ সরকার নির্ধারিত যেটা সেখানে ভর্তি করাতে পারবেন। 

আরো পড়ুন>> ব্যবসায় মার্কেটিং করার ১০টি টিপস জেনে রাখুন

ফিনল্যান্ডে প্রি-স্কুল এবং ডে-কেয়ার সম্পূর্ণ আলাদা। আমাদের দেশে অনেক সময় দেখা যায় প্রাইমারি স্কুলের সাথেই মাধ্যমিক বিদ্যালয় কিন্তু সেখানে ডে-কেয়ার ও প্রি-স্কুল আলাদা।

অনেক সময় নিকটবর্তী ডে-কেয়ারে যদি সিট ফাকা না থাকে তখন একটু দুরে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয় আবার যখন নিকটবর্তীটাতে যখন ফাকা হয় তখন আবার সেখানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়।

এখানে সকল ডে-কেয়ার বা প্রি-স্কুলের ব্যবস্থা সরকারীভাবে মনিটরিং করা হয়। প্রি-স্কুলের মুল মন্ত্রটাই হলো খেলার মাধ্যমে শিক্ষা।

এখানে বর্ণমালা বা সংখ্যা গননা করানো শেখানোর ব্যবস্থা থাকে সেটাও আবার খেলাধূলার মাধ্যমে। অর্থ্যৎ স্কুলে ভর্তি করানোর আগে একটা প্রস্তুতি নেওয়া হয় এই ডে-কেয়ার ও প্রি-স্কুলগুলোতে।

এবার আসা যাক স্কুল সিস্টেম

৭ বছর বয়স থেকেই আসলে স্কুল সিস্টেম শুরু হয়। এই স্কুল সিস্টেমে আপনার বাচ্চাকে কোন ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয় না।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো যেসকল বাচ্চারা ডে-কেয়ার থেকে বের হয় তারা বাসার কাছাকাছি প্রি-স্কুলেই যায় আবার এক বছর সেখানে থাকার পরে বাসার কাছাকাছি স্কুলেই ভর্তি হয় কোন পরীক্ষা ছাড়াই।

সিস্টেম আগের মতই যদি কাছাকাছি স্কুলে সিট না থাকে তবে একটু দুরে দেওয়া হয়। আবার যদি কাছাকাছিটাতে ফাকা হয় তখন আবার কাছাকাছি স্কুলে নিয়ে আসা হয়।

যেহেতু সকল স্কুল একটা নিয়মের মধ্যে চলে তাই পড়াশোনার পার্থক্যটা হয় না। তবে ভর্তি পরীক্ষা একেবারেই নেই বললে ভুল হবে কিছু প্রাইভেট স্কুল আছে যেখানে পরীক্ষা নেওয়া হয় তবে এদের সংখ্যাটা অনেক কম এবং এখানকার অভিভাবকরা সরকারী এই সিস্টেমেই পড়াশোনা করাতে বেশি পছন্দ করে থাকেন।

ফিনল্যান্ডের মাতৃভাষাতেই প্রথমে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের দেশে যেমন বাংলা। তবে মজার বিষয় হুলো ওখানে অন্য দেশের বাচ্চারা যেমন বাংলাদেশের কোন বাচ্চা ভর্তি হলে তাকে চেষ্টা করানো হয় বাংলায় শিক্ষা দেওয়ার।

আবার একই ভাষার ৮ থেকে ১০টা বাচ্চা থাকলে অভিভাবকরা সিটি করপোরেশানে বা স্কুলে আবেদন করে তাদের বাচ্চার জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়ে বাংলা বা নিজ দেশের ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে স্কুলের শুরু থেকেই আপনি মাতৃভাষা শেখানোর পাশা-পাশি ইংরেজী ভাষাটাও শেখাতে পারবেন।

আরো পড়ুন>> বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কেন করবেন? খরচ কত?

আর এই জন্য আপনি আপনার বাচ্চাকে ছোট থেকে ইংরেজী ক্লাবে দিতে পারেন। তবে সকল বাচ্চাকেই পর্যায়ক্রমে শেখানো হয়ে থাকে। ধর্ম শিক্ষার জন্যও তাদেরকে আলাদা আলাদা করে শেখানো হয়। এই জন্য তাদের পদ্ধতিটা অনেক ভালো যে আপনি নিজ দেশের লোকদের জন্য একটা নির্দিষ্ট এরিয়া পাবেন থাকার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডাতেও আমি দেখিছি এই পদ্ধতিটা। আপনি আপনার দেশের লোকদের সাথে একটা নির্দিষ্ট এরিয়াতে বসবাস করতে পারবেন সেখানে।

যার ফলে স্কুলে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে আপনার দেশের অনুকূল খাবারগুলো সেই সকল বাজারে নিজ দেশের পন্য বা অনেক সময় বাংলাদেশীরা যে সব খাবার খায় তাদের বাজারে সেসব ধরনের খাবার রাখা হয়। এটা অনেক ভালো একটা পদ্ধতি যেটা স্কুলে পড়াশোনার করানোর জন্যও অনেক কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।

যেমন আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম তখন একই এলাকাতে যদি অনেক মানুষ থাকে তবে তাদের শেখানোর জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ করা হয়ে থাকে। 

আরো পড়ুন>> Best Freelancer বা ভালো ফ্রিল্যান্সারদের তিনটা গুণ

 দেশের নিয়মনীতি

ফিনল্যান্ডে কমিউনিটি থাকে যেখানে নিজ দেশের কালচার ও নিয়ম শেখানোর ব্যবস্থা থাক। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে যার মাধ্যমে বাংলাদেশীরা

তাদের কালচার শেখাতে পারে। ফিনল্যান্ডে প্রাইমারি পর্যায়ে কোন গ্রেড সিস্টেম নেই যেমন আমাদের দেশের স্কুলের মধ্যেও পার্থক্য আছে কোনটা অনেক ভালো আবার কোনটা কম ভালো তবে ফিনল্যান্ডে সকল স্কুলের শিক্ষা পদ্ধতি বা বই একই থাকে।

একটা নির্দিষ্ট সিলেবাস অনুসরন করা হয় ফিনল্যান্ডে। আমাদের দেশে যেমন ১ম সাময়িক, ২য় সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষা থাকে ওখানে এই ধরনের কোন পদ্ধতি নেই। তবে কোন অধ্যায় শেষ হলে ক্লাস টেস্টের ব্যবস্থা আছে যেটার মাধ্যমে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়।

স্কুলে একটা শিক্ষকের কাছে মোট ২৪টার মত বাচ্চা থাকে সেই শিক্ষকের সাথে আরেকজন শিক্ষক থাকেন। আমাদের দেশে যেমন বাংলার জন্য বাংলার শিক্ষক বা ইংরেজীর জন্য ইংরেজী সেখানে একজন শিক্ষকই সকল বিষয় পড়ানোর দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

একটা  ক্লাস থাকে ৪৫ মিনিটের এবং একটা ক্লাস শেষে ১৫ মিনিটের ব্রেক থাকে। এবং সেই ব্রেকের সময় তারা বাইরে যেতে পারে। ফিনল্যান্ডে স্কুলে টিফিন দেওয়া হয় মজার বিষয় হলো স্কুলের কোন বেতন নেই এবং টিফিনের জন্যও কোন খরচ নেই।

বেতন ও টিফিন ফ্রি দেওয়া হয় ফিনল্যান্ডে। খাবারের বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয় যেমন, সপ্তাহে ৫ দিন চলে স্কুল আর ৫ দিনে ৫ রকমের খাবার থাকে।

কারো যদি খাবারের কোন নিয়ম বা নিশেধ থাকে তবে সেটাও মেনে চলা হয়। মা-বাবারা আগে থেকেই স্কুলে বলে দিলে সেই নিয়মেই সেই বাচ্চাকে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। 

ক্লাস টেস্টের ফলাফল শুধুমাত্র শিক্ষকই জানেন আর আমাদের দেশের মত রেজাল্ট বা মার্কস নিয়ে কোন প্রতিযোগীতা নেই।

ওখানে শিক্ষকরা দায়িত্বশীল তারা কোন বাচ্চা কেমন অগ্রসর হচ্ছে সেটা মনিটরিং করেন এবং বিশেষ কোন বাচ্চা থাকলে তাদের জন্য আলাদা ভাবে শেখানোর ব্যবস্থা থাকে।

আরো পড়ুন>> সুইডেনে যাওয়ার সহজ উপায় জেনে নিন

একটা স্কুলে ডাক্তার ও শরীর চর্চার শিক্ষকও থাকেন। এখানেই হোমওয়ার্কটা করানোর বা শেখানো হয় যেন বাসায় গিয়ে সে নিজেই সেটা করতে পারেন। স্কুল শেষে আলাদা ক্লাসের ব্যবস্থা থাকে।

অনেক সময় অনেকের বাবা-মা অফিসে থাকেন তাদের অতিরিক্ত সময়টা শেখানার জন্য আফটারনুন ক্লাবের ব্যবস্থা থাকে। ১ম শ্রেণি থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ৫ ঘন্টার একটা আফটারনুন ক্লাসের ব্যবস্থা থাকে ফিনল্যান্ডে।

স্কুল সময়ের পরে এই সময়টাতে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের কাজ শেখানো হয় অনেক সময় আছে Art and Craft এসব শেখানো হয়। বাগান করা বা বিভিন্ন শখের জিনিসপত্র বানানো শেখানোর ব্যবস্থা করা থাকে এই Afternoon ক্লাবে।

এখন প্রাথমিক বা পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থায় আসি

হাইস্কুলেও প্রাইমারীর মত কোন পরীক্ষা হয় না তবে ক্লাস টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়।

১ম শ্রেণি থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর একটা ম্যাট্রিক আমাদের দেশে যেটা এস. এস. সি. পরীক্ষা সেটার ব্যবস্থা করা থাকে।

সেখানে একটা নির্দিষ্ট মার্কস এর ব্যবস্থা থাকে বা রেজাল্ট এর ব্যবস্থা যার উপর ভিত্তি করে কলেজে পড়াশোনার করতে পারে।

কলেজেও পড়াশোনার করা ভর্তি করানোর জন্য কোন পরীক্ষা দিতে হয় না তাদেরকে। একটা নির্দিষ্ট গ্রেড বা নাম্বারের উপর ভিত্তি করে ভাগ করা থাকে যেটা দেখে তারা সরাসরি গিয়ে সেখানে ভর্তি হতে পারে।

কলেজে ৩ বছর থাকতে হয় আর প্রত্যেক বছরই সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে হয়। কলেজের গ্রেডের উপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় বা University তে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হতে হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় বা University তে ভর্তি পদ্ধতিটা আমাদের মতই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বা University তে আসার আগের পদ্ধতিটা আমাদের মত নয়। তাদের শিক্ষাব্যবস্থায় স্বাধীন একটা সিস্টেম থাকে যেমন মাধ্যমিক শেষ করে বা কলেজ শেষ করে বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্স করার ব্যবস্থা থাকে।

সেখানে নার্সিং কোর্স, টিচার এসিসটেন্স কোর্সসহ আরও নানা ধরনের কোর্স থাকে। বিভিন্ন মেয়াদে হয়ে থাকে সেকল কোর্সগুলো। 

বিউনিশিয়ান হতে চাইলে তাদের জন্য আলাদা ডিপ্লোমা কোর্স আছে, আবার যারা কুকিং শিখতে চায় তাদের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা আছে যেখানে আপনি আপনার বাচ্চাদেরকে কর্মমুখী শিক্ষাও শিক্ষিত করতে পারবেন।

ফিনল্যান্ডের আর আমাদের শিক্ষ্যব্যবস্থার তুলনা আসলে করা ঠিক হবে না তবে ওদের সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা সেটা হলো কোন প্রেসার দেওয়া হয় না শিক্ষা ব্যবস্থায়। আমাদের দেশে যেমন নাম্বারের

একটা প্রতিযোগীতা বা পরীক্ষা ১ম হওয়ার একটা অভিভাবকদের মধ্যে প্রতিযোগীতা কাজ করে সেটা ফিনল্যান্ডে নেই। আর ওখানার কলেজ বা University এর মাঝখানে ডিপ্লোমা কোর্সগুলোই অনেক হেল্পফুল কারণ এই কোর্স গুলোতে অনেকেরই আগ্রহ থাকে

অনেক বেশি কারণ এখানার সনদ দিয়েই যে কোন কাজ সহজেই পাওয়া যায় আর এটাকে কারিগরি শিক্ষাও বলা যেতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় এই ব্যবস্থা বা পদ্ধতিটাতেই বেশি আগ্রহ থাকে কারণ এখানে কোর্স শেষ করার সাথে সাথেই আপনি প্রফেশাল কাজের সাথে যুক্ত করাতে পারবেন।

আমাদের দেশে যেমন অনার্স শেষ করেও চাকরীর জন্য অনেক সমস্যায় পড়তে হয় সেখানে এই বিষয়টা এড়ানোর জন্যই কারিগরি শিক্ষাটাকে অনেক বেশি মূল্যায়ন করা হয়। University তে ছাত্র-ছাত্রী নিজেরাই নিজেদের পছন্দমত বিষয় নির্ধারন করে পড়াশোনা করতে পারে। 

ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা পৃথিবীর সেরা শিক্ষাব্যবস্থার হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে তাদের শিক্ষকদের মর্যদা। কারণ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের মতই সম্মান দেওয়া হয় শিক্ষকদেরকে।

আর বেতন সবচেয়ে বেশি থাকে শিক্ষকদের। ইউনিভারসিটির সবচেয়ে মেধাবীদেরকে বা শতকরা ১০% মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে চাকরী দেওয়া হয় শিক্ষক হিসেবে। সেখানে শিক্ষকদের কাজের তেমন কোন চাপও নেই। প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় কাজ করলেই বেতন পান তারা। মানসিক ভাবে যেন ভালো থাকেন সেই জন্য ফিনল্যান্ডের শিক্ষকদেরকে আলাদা ভাবে দেখা হয়।

কারণ তারাই এই শিক্ষাব্যবস্থার প্রনেতা এবং তাদের মাধ্যমেই সেরা হয়েছে ফিনল্যান্ড শিক্ষাব্যবস্থায়।

সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যেই শেষ হয় তাদের কাজ এবং শিক্ষাব্যবস্থা ১৬ বছরের নিচে কোন পরীক্ষা নেই। শিক্ষার্থীদের নিজেদের স্বপ্ন বা নিজেদের পছন্দের কাজকে বেশি মূল্যায়ন করা হয় ফিনল্যান্ডে। 

আরও কিছু তথ্য জানার মধ্যে অন্যতম তথ্য হলো এই দেশটিতে আপনি অনেক ভালো মানের দুধ ও কফি পাবেন। এরা বছরে প্রায় ১২ কেজি করে কফি পান করে যা পৃথিবীতে বিরল।

প্রায় ৫৬ রকমের কফি পাওয়া যায় এখানে। দেশটিতে ৬ মাস শীত থাকে অনেক সময় ২৩ ঘন্টা পর্যন্ত সূর্য থাকে। এমনও দেখা যায় যে, ৫০ দিন কোন রাত হয় না। এই দেশের রাজধানীকে নীল নগরী হিসেবে বিবেচনা করা হয় অনেক বেশি হ্রদের কারণে।

আর এই দেশে আপনি কোন প্রাণী কিনলে সেটা মৃত্যু পর্যন্ত আপনাকে লালন-পালন করতে হবে। যদিও নিয়মটা প্রাণীদের জন্য ভালো। ছেলেদের গড় আয়ু ৮২ বছর এবং মেয়েদের ৮৪ বছর।

আমরা অনেকেই জানি না নোকিয়ার মোবাইল ফোন কম্পানির জন্মটাও কিন্তু এই ফিনল্যন্ডেই। এটি ইউরোপের একটি দেশ। শুধু শিক্ষাব্যবস্থাতেই নয় বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ কোনটা যদি কেউ গুগলকে জিজ্ঞেস করে তবে উত্তরটা আসবে ফিনল্যান্ড। ফিনল্যান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশ।

তবে খারাপ বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হলো এই দেশে আত্মহত্যা প্রবণতা বেশি। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রবন দেশের মধ্য ২২তম অবস্থানে আছে ফিনল্যন্ড নামক দেশটি। সূখী মানুষের বিচারেই এই দেশের অর্থনীতির মূল বিষয় নির্ধারণ করা হয়।

উপরের আর্টিকেলটিতে আমার মনে হয় অনেক তথ্যই দেওয়া হয়েছে এই দেশটি সম্পর্কে। আপনি চাইলে আরও তথ্য গুগল থেকে জেনে নিতে পারবেন।

যদিও আমাদের দেশে এখন পর্যণ্ত কোন দূতাবাস নেই ফিনল্যান্ডের পাশের দেশ ভারতে আছে তবে আমাদের দেশের অনেক মানুষই সেখানে বাস করে। অনেকেই পড়াশোনার জন্য বাস করে থাকে।

দেশটিতে শিক্ষার সকল উপকরণই ফ্রি দেওয়া হয় যেটার ব্যয়ভার সরকারই বহন করে থাকে। 

>> Fast Published on: Dec 17, 2020 at 13:46

>> Last Update Published on: Apr 17, 2023 at 21:00

>> Finland Education

>> Finland Education সম্পর্কে জেনে রাখুন

About ডিজিটাল আইটি সেবা

ডিজিটাল আইটি সেবা অনলাইন ভিত্তিক সেবা মূলক প্রতিষ্টান। এখানে অনলাইনে আয়, ডিজিটাল শিক্ষা, ফেইসবুক মার্কেটিং সহ আরও অনেক কাজের ধারণা প্রদান করা হয়। এটি দেশের আর্থিক সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে থাকে।

View all posts by ডিজিটাল আইটি সেবা →

One Comment on “Finland Education কেন বিশ্বসেরা জেনে নিন”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *