আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষার সাথে চাকরির সম্পর্ক

শিক্ষা আর চাকরি বিষয়টা আলাদা। আমি শিক্ষিত বেকার আবার আমি শিক্ষিত একজন উদ্যোক্তা আবার আমি শিক্ষিত একজন কিন্তু সামান্য বেতনের চাকরিজীবি। বিষয়গুলো আসলে আলাদা আলাদা কারণ শিক্ষা আর চাকরি সম্পর্ণ আলাদা বিষয়। আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষার সাথে চাকরির সম্পর্ক নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি। আশা করি বিষয়টা বুঝতে পারবেন কিছু হলেও।


আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষার সাথে চাকরির সম্পর্ক




শিক্ষিত মানেই কি চাকরিজীবি ?


শিক্ষিত হলেই যে চাকরি করতে হবে বিষয়টা তো এমন না। আমার পরিচিত এমন অনেক মেয়েই আছে যারা শিক্ষিত হয়েছে কিন্তু চাকরি করে না। আবার এমনও চিনি যারা অনলাইন কাজ করে বাসায় বসে বসে হয়তো কম আয় করে তবে শিক্ষার দিক থেকে কম না তারা। শিক্ষা আর চাকরি বিষয়টা দুই রকম আর আমাদের দেশের শিক্ষার লক্ষ্যটাই চাকরি এমনভাবেই শিক্ষিত করানো হয়। ‍উদ্যোক্তাও তো হতে পারে আমি ২০১০ এর ব্যাচ পড়াশোনা ১৯ এ শেষ করেই অনলাইনে কাজ ও অফলাইনে ছোট একটা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি আর এ রকম অনেকেই করে। মেয়েরাও করে এখন। আপনি অনলাইনে সেক্টরে দেখলে বিষয়টা বুঝবেন আর আমার জানা মতে উচ্চশিক্ষিত মেয়েরা পারিবারের মর্মটা বোঝে তারা নিজেরা না অনেক ক্ষেত্রে বাধ্যই হয়েই চাকরি করে। আমার পরিচিত এক আপু যিনি আমার এক দুই বছরের সিনিয়র তিনি মাস্টার শেষ করে বিয়ে করে চাকরি না করতে চাইলেও তাকে বাধ্য করা হয় এই বলে যে, শিক্ষিত মেয়ে চাকরি না করলে আত্মীয়স্বজন কি বলবে এসব বলে। 



আমি মনে করি শিক্ষার সাথে চাকরির কোন সম্পর্ক নাই তবে হ্যা একটা আয় করার উপায় যা চাকরি ছাড়ার আরও অনেক আছে। শিক্ষিত হওয়ার পাশপাশি যেন সেসব উপায় শিখে নিতে পারে সেদিকটাতে একটু আমাদেরকে নজর দেওয়া উচিত তাতে পারিবারিক মূল্যবোধ আর পরিবার প্রথাটা ঠিক থাকবে। একটা সময় ঐ সকল মানুষও পরিবারের গুরুত্ববোঝে যারা টাকা বা সম্মানের জন্য ছুটতো কিন্তু সময়ের কাজ সময়ে না করলে অসময়ে পস্তানো ছাড়া কোন উপায় থাকে না। 


শিক্ষার উদ্যোশ্য আসলে কি ? 

প্রমথ চৌধুরী তার বই পড়া প্রবন্ধে অনেক সুন্দর করে বলেছেন আসলে আমাদের শিক্ষার উদ্যেশ্য কি আর বর্তমানে আসলে কি হচ্ছে। কেউ চাইলে এই প্রবন্ধটি পড়ে নিতে পারেন আমার মনে হয় অনেক কিছু শিখতে পারবেন। আসলে শিক্ষার আসল উদ্যোশ্যগুলো আমাদেরকে জানতে ও বুঝতে হবে তারপর সেটা নিয়ে আমাদেরকে আগাতে হবে। সব শিক্ষিত মানুষই যে ভালো আবার সব শিক্ষিত মানুষই যে খারাপ বিষয়টা এমন না। আত্মার প্রশান্তির জন্য যেমন আমার কিছু কাজ করতে হবে তেমনি আমাদেরকে সুশিক্ষিত হয়ে নিজের আত্মার উন্নয়নটাও নিজেকেই করতে হবে। 


শিক্ষার আসল উদ্যেশ্য হলে নিজেকে সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। আর নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের অবস্থানের পরিবর্তন করা। আমি একবার একজন গবেষকের শিক্ষার সঙ্গা পড়েছিলাম সেখানি তিনি বলেন, “কাঙ্খিত আচরণের পরিবর্তনকেই শিক্ষা বলে।” শব্দুগলো অনেক সহজ আর বাক্যটা অনেক ছোট কিন্তু এর অর্থটা অনেক বড় যা আমাদেরকে অনেক কিছু শেখায়। 








একজন শিক্ষিত মা একটা পরিবারের সম্পদ !

নেপোনিয়ান বলেছিলেন শিক্ষিত মা মানেই শিক্ষিত জাতি আর আমি বলবো শিক্ষিত মা মানেই পরিবারের একটা সম্পদ। আর এই সম্পদের সঠিক ব্যবহার আমাদেরকে শিখতে হবে বা বুঝতে হবে। আমাদের দেশের মেয়েরা এমনিতেই সামাজিক ভাবে এখনও অবহেলিত যদিও রাষ্ট্রীয়ভাবে অনেক বেশি শক্তিশালি। আসলে সবাই তো একটা না একটা পরিবারে বাস করে আর পরিবারগুলো তো একটা সমাজেরই অংশ। 


একজন শিক্ষিত মেয়ে মানেই যে তাকে চাকরি করতে হবে বিষয়টা এমন না আমাদেরকে এই ধরনের মানষিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ছেলের ক্ষেত্রে বিষয়টা এমন শিক্ষিত হয়ে সে ব্যবসাও করতে পারে আবার শিক্ষিত হয়ে সে কৃষি কাজও করতে পারে। অর্থ উপার্জনের জন্য যদি কেউ শিক্ষিত হতে চায় আমি তাকে বলবো এতটা সময় নষ্ট না করে ৫ম শ্রেণি পাশ কেরই কোন একটা প্রফেশনাল কাজে লেগে যেতে তাতে সে ১০ বছরে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবে বা উপার্জন করার উপায় শিখবে। 








শিক্ষিত বেকারদের জীবন-যাপন কেমন বর্তমানে !

এটা আসলে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বর্তমানে আমাদের দেশে। বেকার তো অনেক আছে তবে শিক্ষিত বেকার আমাদের দেশেই মনে হয় বেশি হয়তো জনসংখ্যার তুলনায়। বর্তমানে একজন শিক্ষিত মানুষের যদি ভালো কোন চাকরির না থাকে তবে আমাদের সমাজ নানা ভাবে তাকে নিয়ে উপহাস বা বুলিং করে থাকে। আমার জানা বা দেখা একটা উদাহারণ দেবো যদিও দৃশ্যটা হয়তো অনেকেরই চোখে পড়েছে। 


একবার একটা চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখলাম একজন চাকরির পরীক্ষার্থীকে ধমক দিয়ে নিয়ম শেখাচ্ছেন। যদিও বয়স আর যোগ্যতার দিক থেকে মনে হলে যিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি অনেক মেধাবী আর শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে ভালো। আসলে এই দৃশ্যটা আমাদের দেশে কমন। একটা সময় হয়তো যিনি আজকে বকা দিচ্ছেন তিনিও এমন ব্রেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং দেওয়ার পরে চাকরিটা পেয়েছিলেন কিন্তু আজকে তিনি আরেকজনকে এভাবে বলছেন অথচ নিজের অতিকটা চিন্তাও করছেন না। এটাই হয়তো নিয়ম বা নিয়তি আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকারদের। 



শিক্ষিত বেকার মেয়েদের জীবন কেমন হয় ?

যদিও বিষয়টা অনেক জটিল বলা তারপরেও নিজের দেখা কয়েকটা আমি বলতে পারি। আমাদের দেশে সাধারণত মেয়েয়দেরকে পড়াশোনা করা অবস্থাতেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় তারপরেও কিছু আছে যারা পড়াশোনা করে থাকে এবং নিজের যোগ্যতা প্রমান করার জন্য চাকরির প্রত্যাশা করে থাকে। এমন মেয়েদের সংখ্যা যদিও কম তারপরেও যারাই আছেন তারা অনেকটাই ধৈয্যশীল আমি বলবো কারণ বিয়ে হয় নাই কেন ? চাকরি করে না কেন ? আর কবে বিয়ে হবে ? বড় মেয়েটার জন্য ছোটগুলো বিয়ে হবে না। 








আরও নানা রকমের কথা শুনতে হয় এসব শিক্ষিত মেয়েদের। কথাগুলো যে শুধু অপরিচিত মানুষরা বলে বিষয়টা কিন্তু তা নয় পরিচিতরাও বলেন যা সত্যিই অনেক কষ্টদায়ক বিষয়। 

About ডিজিটাল আইটি সেবা

ডিজিটাল আইটি সেবা অনলাইন ভিত্তিক সেবা মূলক প্রতিষ্টান। এখানে অনলাইনে আয়, ডিজিটাল শিক্ষা, ফেইসবুক মার্কেটিং সহ আরও অনেক কাজের ধারণা প্রদান করা হয়। এটি দেশের আর্থিক সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে থাকে।

View all posts by ডিজিটাল আইটি সেবা →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *