ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO কি ?
Table of Contents
আজকের আর্টিকেলটি মূলত ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO সম্পর্কে। বর্তমানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সেই সাথে সাথে এফ-কমার্স বা F-Commerce এর পরিমাণটাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরো পড়ুন >> গুগল অ্যাডসেন্স এর CPC বাড়ানোর পদ্ধতি সমূহ
ই-কমার্স এর বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে আমরা চেষ্টা করবো পরিপূর্ণ ধারণা দিতে। আশা করবো আর্টিকেলটি ভালো লাগবে। এখানে আমি সবগুলো বিষয় পয়েন্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করবো যেন সবাই সহজেই বুঝতে পারেন।
তারপরেও ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO নিয়ে কোন বিষয় যা এখানে আলোচনা করা হয়েছে বা হয় নাই। সেগুলো আমাদেরকে জানাবেন আমরা ও আমাদের টিমের মেম্বাররা অবশ্যই জানানোর চেষ্টা করবে সময় করে।
ই-কমার্স এসইও
ই-কমার্স বর্তমান সময়ের ট্রেন্ডিং একটা বিষয়, দিন দিন এর চাহিদাও বেড়েই চলছে। তাই এই সেক্টরে এসইও এর চাহিদাও বাড়ছে।
তবে নরমাল এসইও আর ই-কমার্স এসইও এর বেশ কিছু পার্থক্য আছে, যে গুলো আপনাকে অবস্যয় জানতে হবে। সাথে ই-কমার্স এসইও এর জন্য এক্সট্রা কিছু স্কিল থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ । আজকে আমরা নিদিষ্ট কিছু প্রশ্ন এবং বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
ই-কমার্স সাইটে এসইও করবো কি ভাবে ?
আসলে কি করে এসইও করবেন সেটা একটা আটিকেল লিখে বুঝানো কষ্টকর, যদিও এতো কঠিন না, তবুও নিম্নে কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করলাম। ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO করার জন্য মোট ৮টি স্টেপ আমি নিচে দিয়ে দেবো ইনশাআল্লাহ।
স্টেপ – ১
(১) সাইট অডিট করুন (কিভাবে ই-কমার্স সাইট অডিট করতে হয় পরবর্তীতে আটিকেল দিবো ইনশাআল্লাহ)
(২) যে সমস্যা গুলো বের করেছেন, সেগুলো আগে সমাধান করে নিন।
(৩) হোম পেজে কোনো লিংক ব্রোকেন রাখবেন না।
(৪) ডিজাইন ঠিকমতো আছে কিনা, অফার ব্যানার, ফন্ট, ব্যান্ডিং ক্যালার যাচাই করুন।
(৫) মোবাইল রেসপনসিভ কিনা যাচাই করুন, না থাকলে সমাধান করুন।
(৬) সাইটের স্পিড যাচাই করুন, মোবাইল ৭০/ পিসি ৮০ এর নিচে স্পিড স্কোর হলে স্পিড অপ্টিমাইজ করুন।
(৭) গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলো আছে কিনা চেক করুন। ( Terms & Conditions, Returns & Refunds, Payment Terms, Delivery Terms, Privacy Policy, Contact Us, About Us)
(৮) সাইট ফুটারে অবস্যয় গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলো লিংক করে দিবেন।
স্টেপ – ২
(ক) সাইটের মেইন টাইটেল ও ডিসক্রিপশন টিকমতো অপ্টিমািইজ করুন। ইউ আর এল (URL) স্ট্রাকচার ঠিক করে নেন,
1. Site. com/products/iphone
2. Site. com/iphone
3. Site. com/mobile/iphone
(খ) যে কোনো একটা ফরমেট ব্যাবহার করতে পারেন এতে করে কেনো সমস্যা নাই, তবে আমি ১ নাম্বারটা বেশি রিকমেন্ড করি।
(গ) ব্রেডক্রাম্বস (breadcrumbs) ব্যাবহার করুন।
(ঘ) ক্যাটাগরি, ট্যাগ এবং রিভিও, ইনডেক্স রাখবেন (ট্যাগ এবং রিভিও অপশনাল)
(ঙ) সাইট ম্যাপ জেনারেট করুন
(চ) রোবট টেক্স (Robots.txt) ঠিকমতো তৈরী করুন, কেনো ভুল হলে ইনডেক্সিং এ সমস্যা হতে পারে।
(ছ) সাইটের শপিং স্কিমা স্টাকচ্যার ঠিকমতো ব্যাবহার করুন।
(জ) সার্চ কনসোলে সাইট এড করুন।
(ঝ) গুগল এনালিটিক্স এড করুন।
ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO করার সময় উপরের পয়েন্টগুলো অবশ্যই ভালো মত অনুসরণ করার চেস্টা করুন। এখানে আমি সহজ করে বলার চেষ্টা করেছি প্রতিটি বিষয়।
স্টেপ – ৩
’’প্রডাক্টস ক্যাটাগরি এসইও’’
ই-কমার্স সাইটের জন্য প্রডাক্টস ক্যাটাগরি এসইও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্যাটাগরি বেশি রাষ্ক করে থাকে। তাই এটা অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। নিম্নে কিছু পয়েন্ট এড করলাম।
(১) ক্যাটাগরি অবস্যয় কী-ওয়ার্ড উনুযায়ী অপ্টিমাইজ করতে হবে।
(২) টাইটেলে কী-ওয়ার্ড ব্যাবহার করুন, পাওয়ার ওয়ার্ড ব্যাবহার করুন।
(৩) ডিসক্রিপশন কী-ওয়ার্ড উনুযায়ী লিখতে হবে।
(৪) ক্যাটাগরিতে এক্সট্রা আর্টিকেল এড করতে পারেন, এতে করে বেশ বেনিফিট পাবেন। তবে ব্যাধ্যতামুলক না।
(৫) ক্যাটাগরি ইমেজ ব্যাবহার করবেন । ইমেজের ফাইল নাম,ইমেজ অল্ট টেক্সট কী-ওয়ার্ড উনুযায়ী দিতে হবে।
ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO করার জন্য এই ৫টি বিষয় অনেক বেশি জরুরী একটি বিষয়। আশা করবো সবাই সহজেই বুঝতে পারবেন এই পয়েন্টগুলো এবং নিজেরাই নিজেদের কাজে লাগাতে পারবেন।
স্টেপ – ৪
’’প্রডাক্টস এসইও’’
একটা ছোট সাইটে প্রডাক্টস এসইও করা সহজ কারন সেখানে খুব কোম প্রডাক্টস থাকে, হয়তো কয়েক দিন বা সপ্তাহে করে ফেলতে পারবেন।
কিন্তুু যদি এমন একটা সাইট হয়, যেখানে কয়েক মিলিয়ন প্রডাক্টস আছে, তখন আপনি কি করবেন ?
একটা একটা করে কি সব প্রডাক্টস এসইও করবেন বছরে পর বছর?
না, এটা করার দরকার নাই। আপনি ডাইনামিক ভাবেও সবগুলো প্রডাক্টস এসইও করতে পারেন, কিন্তু তারজন্য অবস্যয় একজন ডেভেলপার এর সাহায্য লাগবে। হয়তো অন্য কোন দিন ডাইনামিক এসইও নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
আপনি যদি নিদিষ্ট একটা প্রডাক্টস রাষ্ক করাতে চান, তবে অবস্যয় আপনাকে নিদিষ্ট কী-ওয়ার্ড দিয়ে আপনাকে প্রডাক্টসটি অপ্টিমাইজ করতে হবে। আজকে প্রডাক্টস এসইও নিয়ে কিছু পয়েন্ট দেখি চলুন:
(১) প্রডাক্টস এর কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করুন
(২) কী-ওয়ার্ড উনুযায়ী টাইটেল অপ্টিমাইজ করুন, প্রডাক্টস টাইটেল অবস্যয় ছোট এবং ক্লিন রাখতে হবে।
(৩) প্রডাক্টস ডিসক্রিপশন অবস্যয় ইওউনিক হতে হবে, দরকার হলে রি-রাইট করে নিবেন, তারপরেও অন্য সাইট থেকে সরাসরি কপি করবেন না।
(৪) ডিসক্রিপশনে একাধিক H2, H3, H4 ট্যাগ ব্যাবহার করুন।
(৫) ডিসক্রিপশনে ইমেজ ব্যাবহার করুন, তবে ইমেজ অবস্যয় কপি করে ব্যাবহার করবেন না, একটু চেঞ্জ করে নিবেন। ইমেজ অল্ট টেক্সট ব্যাবহার করুন।
(৬) ডিসক্রিপশনে টেবিল, বুলেট পয়েন্ট ব্যাবহার করতে পারেন।
(৭) প্যারাগ্রাফ ছোট ছোট করে লিখুন, একটানা বড় করে করে লিখবেন না।
(৮) বানান ভুল এরিয়ে চলুন।
(৯) ইন্টারনাল লিঙ্কিং করুন অবস্যয় রিলেটেড প্রডাক্টস, ক্যাটাগরি কিনবা কোনো ব্লগ পোষ্ট কে।
(১০) এক্সটার্নাল লিঙ্কিং করুন অবস্যয় রিলেটেড কেনো সোর্চ এ, একাধিক লিংক দিতে পারেন। ডু-ফলো/ নো-ফলো দুই ধরনের লিংকই দিবেন।
(১১) প্রডাক্টস ইমেজ এর অল্ট টেক্সট ব্যাবহার করবে, গ্যালারি ইমেজও ব্যাবহার করবেন।
ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO নিয়ে এখানে যেই ১১টি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে সবগুলোই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আশা করবো সবাই সহজেই বুঝতে পারবেন এবং নিজেদের ব্যবসায় কাজে লাগাবেন।
স্টেপ – ৫
’’ই-কমার্স ব্যাকলিংক’’
যদিও ব্যাকলিংক সব সাইটের জন্যয় গুরুত্বপূর্ণ, তবে ই-কমার্স সাইটের জন্য এটা তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ না, তবে আপনি ব্যাকলিংক করতেই পারেন।
তবে যেহেতু লাখ লাখ প্রডাক্টস আপনার সাটটে আছে, সবগুলো প্রডক্টস এ তো ব্যাকলিংক করেত পারবেন না, আপনি চাইলে আপনার হোম পেজে ব্যাকলিংক করতে পারেন, কিছু ক্যাটাগরি তেও ব্যাকলিংক করতে পারেন।
আর যদি আপনার স্পেশাল কোনো প্রডাক্টস থাকে, তবে সেটাতেও স্পেশাল ভাবে ব্যাকলিংক করতে পারেন। তবে যে ব্যাকলিংক করতেই হবে এমন না। তবে করলে ভালো।
তবে কি টাইপ ব্যাকলিংক করবো?
নিম্নের ব্যাকলিংক গুলো করতে পারেন:
(ক) প্রফাইল ব্যাকলিংক
(খ) স্যোসাল ব্যাকলিংক
(গ) ইমেজ সাবমিশন ব্যাকলিংক
(ঘ) ডিরেক্টরি সাবমিশন
(ঙ) আটিকেল সাবমিশন
(চ) গেষ্টপোষ্ট
(ছ) প্রশ্ন উত্তর ব্যাকলিংক
(জ) আরো ন্যাচারাল টাইপ ব্যাকলিংক করতে পারেন
স্টেপ – ৬
কিভাবে ই-কমার্স সাইটে ট্রাফিক বাড়াতে পারি ?
ই-কমার্স সাইটে ট্রাফিক বাড়াতে নানা রোকম পদ্ধতি ব্যাবহার করা যায়, নিম্নে কিছু পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো:
(১) সাইটে ব্লগ সেকশন রাখতে পারেন, সেখানে কী-ওয়ার্ড উনুযায়ী আপনার রিলেটেড বিষয়ে ইনফরমেশন কন্টেন্ট দিতে পারেন। সেখান থেকে ট্রাফিক ড্রাইভ করে প্রডাক্টস পেজে আনতে পারেন। এতে করে সেল বাড়তে পারে।
(২) নিদিষ্ট কিছু প্রডাক্টস ভালোমতো এসইও করতে পারেন, প্রডাক্টস রাঙ্ক করলে সেখান থেকে ট্রাফিক পাওয়া শুরু করবেন। এখানে বেশি সময় লাগেনা যদি কী-ওয়ার্ড উনুযায়ী অপ্টিমাইজ করেন।
(৩) পিন্টারেষ্ট ব্যাবহার করুন, এটা একটা দরুন ট্রাফিক সোর্চ, পিন্টারেষ্ট শপ এর মাদ্ধমে আপনার সরাসরি সেল ও আসবে।
(৪) গুগল মার্চেন্ট সেন্টার ব্যাবহার করুন, এখান থেকে বর্তমানে অনেক ভালো ট্রফিক ও সেল আসে, মাসে মিলিয়ন এর ও বেশি ট্রাফিক পেতে পারেন।
(৫) সোস্যাল মিডিয়াতে অবস্যয় এক্টিভ থাকতে হবে।
স্টেপ – ৭
সবকিছুই করলাম এখন কি করবো?
এখন নিয়মিত সাইট অডিট করুন, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখেন, ইনডেক্ট ইসু চেক করুন। নিয়মিত সার্চ কনসোল ঘুরে দেখুন। গুগল এনালিটিক্স ঘুরে দেখুন, দেখুন কোন কোন প্রডাক্টস ভালো পারফরমেন্স করছে, সেগুলো আবারো এসইও চেক দিতে পারেন।
স্টেপ – ৮
তারাতারি সেল চাই, কি করবো ?
এসইও তে তাড়াহুড়োর কেনো স্থান নেই, তারপরেও তো একটা লিমিট আছে, আর কতো অপেক্ষা করা যায়!
তারাতারি সেল এর জন্য গুগল মার্চেন্ট সেন্টারে ফ্রি লিষ্টিং ব্যাবহার করুন, গুগুল শপিং এড ব্যাবহার করতে পারেন, তাছাড়া ফ্রেসবুক এড ও দেখতে পারেন।
তবে এসইও তে অবস্যয় রেজাল্ট পারেন, ২-৩ মাস অপেক্ষা করুন, তার আগেই ভালো রেজাল্ট পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আমি তেমন একটা লিখিনা, তাই ভুলে হলে মাফ করে দিয়েন ভাই। আর আমার কোনা যায়গায় ভুল হলে ধরিয়ে দিয়েন ।
যদি আরো নিদিষ্ট কিছু জানার থাকে কমেন্ট এ জানান, ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন অনুগ্রহ করে।
ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO নিয়ে লিখা মোট ৮টি ধাপ বা স্টেপ আশা করবো সবারই উপকারে আসবে। বিশেষ করে যারা ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO করতে চান বা করাতে চান তাদের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
E-Commerce SEO আটিকেলটি প্রথম প্রকাশিত হয় ৭ই আগষ্ট ২০২২ সাল
লিখা = মিনহাজ হোসেন
2 Comments on “ই-কমার্স এসইও বা E-Commerce SEO কি ? বিস্তারিত তথ্য”