অ্যালার্জি বা এলার্জি কেন হয় ? আপনি অ্যালার্জি হলে কি করতে পারেন

আমার এই আটিকেল পড়তে কি আপনার এলার্জি আছে কোন ? আসলে আমি বলছি আমাদের শারীরিক একটা সমস্যা যেটাকে আমরা এলার্জি বা অ্যালার্জি বলি সেটা নিয়ে। এলার্জি বা অ্যালার্জি অতি সাধারণ হলেও এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর বলা যায়। সাধারণত খাদ্য সমস্যার কারণে হয় এই এলার্জি বা অ্যালার্জি। সবার আগে এলার্জি বা অ্যালার্জি কি বা এলার্জি বা অ্যালার্জি কাকে বলে সেটা জানা দরকার। 


এলার্জি বা অ্যালার্জি


এলার্জি বা অ্যালার্জি কি ? এলার্জি বা অ্যালার্জি কাকে বলে ? 

এলার্জি বা অ্যালার্জি একটি অতি সাধারণ একটি রোগ। শরীরে সাধারণত কোন খাবার খাওয়ার পর যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সেটিকেই মূলত এলার্জি বা অ্যালার্জি বলে। এটি সাধারণত শিশুদের বেশি দেখা যায়। তবে সকল বয়সীদের থাকতে পারে এই এলার্জি বা অ্যালার্জি রোগটি। কারো বেশি আবার কারো কম তবে অনেকেরই এত বেশি এলার্জি বা অ্যালার্জি থাকে যেটা চিকিৎসা না নিলে সমস্যার সৃষ্টি হয় অনেক সময়। 

অনেক ডাক্তার মনে করেন মানুষের ছোট বয়সে এলার্জি বা অ্যালার্জি থাকলে অনেকেরই আবার বয়স বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে তা ঠিক হয়ে যায়। তবে অনেকেরই আবার সারাজীবন এলার্জি বা অ্যালার্জি তে ভুগতে হবে পারে। আগে এলার্জি বা অ্যালার্জি ছিল না অথচ নতুন কোন খাবার প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্য এই এলার্জি বা অ্যালার্জি তৈরি করতে পারেন বলেও বলেন ডাক্তার বা এলার্জি বা অ্যালার্জি নিয়ে গবেষনা করে যারা তারা। আর এই এলার্জি বা অ্যালার্জি থেকে বেচে থাকার সহজ উপায় হলো এলার্জি বা অ্যালার্জি আছে এমন খাবার পরিহার করে চলা। 


এলার্জি বা অ্যালার্জি নিয়ে আর্ত্মরজার্তিক একটি সংস্থা অর্থ্যৎ ওয়ার্ড এলার্জি বা অ্যালার্জি অরগানাইজেশান তাদের একটা জরিপ বলছে যে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০% মানুষ এলার্জি বা অ্যালার্জি সংক্রান্ত রোগে ভুগছে যা প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালে। 

সূত্রঃ ওয়ার্ল্ড এলার্জি অরগানাইজেশন জার্নাল 


এলার্জি বা অ্যালার্জি কিভাবে হয় ? 

প্রতিটি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে। একে বলা হয় ইমিউনি সিস্টেম বা Immune System. আমাদের শরীরে এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করে না বা আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন কোন কিছু আমাদের শরীরে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তখনই এই অ্যালার্জি দেখা দেয়। 

অর্থ্যৎ আমরা যে খাবার খায় বা কোন বস্তুর কাছে আসি যেটা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বুঝতে পারে না। তখন এসব খাবার বা বস্তুর প্রতি এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। যাকে অ্যালার্জি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের দেশে এলার্জি বা অ্যালার্জি তে ভোগেন এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। 


এলার্জি বা অ্যালার্জি তে আসলে কি হয় ? 

এলার্জি বা অ্যালার্জি তে হাঁচি থেকে শুরু করে চুলকানি এমনকি শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এই অ্যালার্জি সামান্য অসুবিধা তৈরি করে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে অনেক বেশি অসুবিধা তৈরি করে থাকে। 


এলার্জি বা অ্যালার্জি এর উপসর্গ কী ? 

যে সকল বস্তুর প্রতি আপনার এলার্জি বা অ্যালার্জি আছে সে বস্তুর কাছাকাছি আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেক সময় এটি অনেক ঘন্টা পর্যন্ত হতে পারে। তবে আসার কথা হলো বেশিভাগ এলার্জিই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

মাঝে মাঝে এলার্জি বা অ্যালার্জি এর কারণে মারাত্বক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। একে বলা হয় অ্যানাফিল্যাক্সিস। এছাড়াও এলার্জি বা অ্যালার্জি থাকার কারণে যে সকল উপসর্গ দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো হাঁচি, চুলকানি, সর্দি এবং বন্ধ নাক অন্যতম। চোখে চুলকানি, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া এগুলো সাধারণত দেখা যায়। 

এছাড়াও শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে শব্দ হওয়া বা বুক ভারী হয়ে যাওয়ার মত সমস্যাও হতে পারে। শরীর ও ত্বকে লাল হয়ে ফুলে যাওয়া আমার মনে হয় এটি সবারই কমবেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও চোখ, মুখ, জিহ্বা এসব অঙ্গ স্বাভাবিকের তুলনায় ফুলে যায়। এছাড়াও ত্বক শুকিয়ে যাওয়া ও লাল হয়ে কেটে যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। 

তবে আপনি কোন বস্তুর সংস্পর্শে এসেছেন আর সেটি কি ধরনের বস্তু সেটির উপর প্রতিক্রিয়া অনেকাংশ নির্ভর করে থাকে। যেমন, আপনার যদি ফুলের রেণুতে এলার্জি থেকে থাকে তাহলে আপনার হাঁচি বা সর্দি-কাশি হতে পারে। আপনার যদি ত্বকের এলার্জি হয় তবে সেক্ষেত্রে র‌্যাশ হয়ে লাল হয়ে ফুলে যাবে। 

আবার যদি এলার্জি রয়েছে এমন কোন খাবার আপনি খেয়ে ফেলেন তাহলে সেটি খাওয়ার সাথে সাথে বা কিছু সময় পর আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন। অনেকেরই শরীর চুলকানোর পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়। আর এই ধরনের এলার্জি েকয়েক মিনিটের মত হয় আর কখনও কখনও এটা প্রাণঘাতীও হতে পারে বলে বলেন ডাক্তাররা। তবে যাদের খাবার খেলেই এলার্জি হয় এসব রোগীদের একটু বেশিই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে অন্যদের তুলনায়। 


অ্যানাফিল্যাক্সিসেসর উপসর্গ কী ? 

খাবারে যাদের এলার্জি হয় তাদের নিচের উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে। 

(১) গলা ফুলে যাওয়া। 

(২) মুখ ফুলে যাওয়া। 

(৩) শ্বাসকষ্ট হওয়া। 

(৪) ঘুমঘুম ভাব হওয়া। 

(৫) জ্ঞান হারানোর মত অবস্থা হওয়া। 

(৬) প্রলাপ বকতে থাকা। 

(৭) ঠোট এবং ত্বক নীল হয়ে যাওয়া। 

(৮) পড়ে যাওয়া বা জ্ঞান হারানো। 

তবে জ্ঞান হারানো বা পড়ে যাওয়ার মত ঘটনা খুব একটা বেশি দেখা যায় না। 


অ্যালার্জি হলে কী করবেন ? 

আপনার যদি মনে হয় যে, আপনার এলার্জি আছে তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আর চিকিৎসকের কাছে গিযে কি ধরনের এলার্জি আপনার আছে সেটির উপর নির্ভর করেই আপনাকে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসককে জানাতে হবে আপনার কোন কোন বস্তু বা খাবারের প্রতি এলার্জি আছে এবং কি কি উপসর্গ দেখা যায়। এলার্জি হলে কি ধরনের সমস্যা আর সেই সমস্যা কত সময় ধরে স্থায়ী হয় এসব তথ্য সঠিকভাবে ডাক্তারকে জানাতে হবে। 

সাধারণত এলার্জি  এমন বস্তু বা জিনিস থেকে দূরে থাকাই এলার্জির আসল বা প্রধান চিকিৎসা বা এলার্জি হলে করণীয় কাজের মধ্যে অন্যতম। কারণ ঔষধ অনেক সময় পাশ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে আর সেসব বস্তু একটু মনে করে এড়িয়ে চললে সমস্যা কম হয়। 

এলার্জির জন্য টেস্ট আছে বিভিন্ন ধরনের। যাদের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা অন্যতম। তবে অনেক সময় বিভিন্ন বস্তুর কিছু উপাদান শরীরে দিয়ে কিছু সময় রেখে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। আর যাদের কোন খাবারের এলার্জি আছে সেটার জন্য ডাক্তারদের সামনে বা হাসপাতালে বসেই সেই সব খাবার খেয়ে তা পরীক্ষা করা হয়। আর ডাক্তাররা এই কাজটা একা একা করতে নিশেধ করে থাকেন অনেক সময় কারণ খাবারের এলার্জিটাকে একটু বেশি ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

অ্যালার্জির চিকিৎসা কী ? 

এলার্জির চিকিৎসা ব্যাক্তিভেদে আলাদা হয়ে থাকে। কারণ সবার অ্যালার্জির ধরন একই রকম হয় না। একেক মানুষের এলার্জি একেক রকম হওয়ার কারণে অ্যালার্জির চিকিৎসাটাও একেক রকম হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, যাদের কোন বস্তুতে এলার্জি আছে তাদেরকে সাধারণত সেই সকর বস্তু এড়িয়ে চলতে বলা হয়। আবার যাদের কোন খাবারে এলার্জি আছে তাদেরকে সেগুলো এড়িয়ে চলতে বলা হয়। এটি হলো ঔষধ ছাড়া সহজ চিকিৎসা পদ্ধতি। একটু নিয়মশ্রঙ্খলা মেনে চললে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে থাকে বলেও ডাক্তাররা মনে করেন। 

আর্টিকেলটি মূলত এলার্জি বা অ্যালার্জি সমস্যায় আক্রান্ত ব্যাক্তিদের জন্য। আমাদের দেশের এলার্জি নেই এমন মানুষ কম। কারো হয়তা কম আবার কারো একটু বেশি শুধু যে এলার্জিতে আমাদের শরীরেই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় বিষয়টা তেমন না আমাদের মনেও এর বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন ডাক্তাররা। 

কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে ?

সাধারণত আমাদের দেশের শিশুদের এলার্জিটা আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছে। তবে নিচের খাবারগুলো সাধারণত শিশুদের এলার্জি বেশি হয়ে থাকে। যেমন, 

(১) দুধ। 

(২) ডিম। 

(৩) চিনাবাদাম। 

(৪) বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন, কাঠবাদাম, ব্রাজিল নাটস, আখরোট, পাইন বাদাম ইত্যাদি।

(৫) তিল। 

(৬) মাছ। 

(৭) বিভিন্ন খোলওয়ালা মাছ যেমন, চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক ইত্যাদি।


আশা করি আর্টিকেলটি সবার উপকারে আসবে। পুরো আটিকেলটি বিবিসি বাংলার সংবাদ থেকে বা তাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া। আর আপনার মূল্যবান মন্তব্য অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য। 

About ডিজিটাল আইটি সেবা

ডিজিটাল আইটি সেবা অনলাইন ভিত্তিক সেবা মূলক প্রতিষ্টান। এখানে অনলাইনে আয়, ডিজিটাল শিক্ষা, ফেইসবুক মার্কেটিং সহ আরও অনেক কাজের ধারণা প্রদান করা হয়। এটি দেশের আর্থিক সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে থাকে।

View all posts by ডিজিটাল আইটি সেবা →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *