ভাইবাতে কেন ফেল করানো হয়

২০২১ সালের ভাইবা কেমন হবে ? ভাইবার বোর্ডের প্রশ্ন ও উত্তর কেমন ভাবে দিতে হয় ? ভাইবাতে কেন ফেল করানো হয় ?  সাধারণত ভাইবাতে কোন ধরনের প্রশ্ন বেশি করা হয় আর কোন ধরনের প্রশ্নের উত্তর আমরা ভুল করি এসব বিষয়ও জানতে পারবেন এই লিখাটি পড়ার মাধ্যমে। 


ভাইবাতে ভালো করতে হলে ছোট ছোট কোন কোন বিষয় আপনি বেশি মনোযোগ দিবেন আর সেটা কিভাবে দেবেন তা জানা অনেক জরুরী। আর সামান্য সময় ব্যয় করে আপনি অবশ্যই বিষয়গুলো জেনে নেবেন। ভাইবা নিয়ে আমাদের দেশের খুব বেশি আলোচনা না হওয়ার কারণে এসব তথ্য খুব বেশি পাওয়া যায় না। তাই আমার মনে হয় লিখাটা আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে যদি আপনি একজন চাকরী প্রত্যাশী হোন। 


ভাইবাতে কেন ফেল করানো হয়

সাধারণত ভাইবাতে কাউকে ফেল করানো হয় না। আপনি যদি উপস্থিত থাকেন আর কোন প্রশ্নের উত্তর যদি দিতেও না পারেন এবং শুধু নিরে নাম ও ঠিকানা ঠিকঠাকমত বলতে পারেন তবে আপনাকে ফেল করানো হবে না। তবে কিছু বিষয় ভাইবা বোডে আপনাকে দেখে ভাইবাতে উপস্থিত লোকজন। 
অনেক সময় আপনি যেই পোস্ট এ আবেদন করেছেন সেটা সম্পর্কে কতটুকু জানেন সেসব বিষয় এবং আপনি সেই পোস্ট এর যোগ্য কিনা সেটা যাচাই-বাছাই করা হয়। অনেকেই অনেক প্রিপারেশান নিয়ে যায় তবে এখানে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নিজের সম্পর্কে জানা এবং সেগুলো উপস্থিত করা। কারণ অনেকেই এই কাজটাই পারে না বাকি বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশ্ন এসব তো আপনি নাও পারতে পারেন সেটা ভাইবা বোর্ডের লোকজনও জানে। 
আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে কিছূ কারণ জানানোর চেষ্টা করবো কি কি কারণে আপনি ভাইবাতে ফেল করতে পারেন আর সেগুলো কাটানোর জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন। 
নিজের এলাকা সম্পর্কে না জানা

অনেক জরুরী বিষয়টা জানা কারণ আপনি আপনার নিজ এলাকা সম্পর্কে যদি না জানেন তাহলে দেশ সম্পর্কে তো জানবেন না এটাই স্বাভাবিক। আর ভাইবাতে আপনাকে জানার জন্য অনেক বেশি সময় থাকে না আর এই কম সময়ের মধ্যে আপনি আপনাকে যত বেশি উপস্থাপন করতে পারবেন আপনি তত ভালো করবেন সেখানে। আপনার নিজ এলাকা সম্পর্কে বলতে আপনার এলাকার গুরুত্ব কেন ? মুক্তিযু্দ্ধ ও সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এসব তথ্য আপনাকে জানতে হবে। কেন বিখ্যাত আপনার নিজে জেলা এসব তথ্যও জানা অনেক বেশি জরুরী। আসলে আপনি যখন আপনার এলাকা সম্পর্কে বলবেন তখন তাদের কাছে পরিস্কার একটা ধারণা থাকবে আপনি আপনার এলাকার সমস্যাগুলো জানেন এবং সমস্যাগুলো যদি জানেন তবে তার সমাধানটাও আপনি বের করতে পারবেন। বড় বড় ব্যাক্তিত্ব কারা আছেন আপনার এলাকাতে এসব তথ্যও আপনাকে জানতে হবে ভাইবার জন্য। 
মূল কথা হলো আপনাকে যখনই আপনার নিরে সম্পর্কে বলতে বলবে আপনি যেমন নিজের সম্পর্কে জানানো যায় সকল তথ্য জানান তেমনি নিজের এলাকা সম্পর্কে জানতে চাইলে সেটাও সেরকমই জানাতে হবে আপনাকে। অনেকেই ভাইবা দিতে গেলে এই প্রশ্নটার উত্তর দিতে পারে না আর তাই আপনাকে অবশ্যই এই কমন একটা প্রশ্ন সম্পর্কে ভালোমত উত্তর রেডি করে বা মুখস্ত করে নিয়ে যেতে হবে ভাইবা দিতে যাওয়ার আগে। বিসিএস বা পিএসসির সকল পরীক্ষাতে আপনাকে নিজে জেলা বা নিজে উপজেলা সম্পর্কে জানতে চাইবে এর কারণ হলো আপনি যদি নিজের জেলা বা উপজেলা সম্পর্কে না জানেন তবে আপনি দেশের সেবামূলক খাতে গেলে আপনাকে জেনে তারপর তা সম্পর্কে আগাতে হবে আর আগে থেকেই জানা ব্যক্তিদেরকে মূল্যায়ন করা হবে বেশি সেক্ষেত্রে। এই বিষয়টা অনেক বেশি জরুরী প্রসাশন বা সরকারী বড় বড় পোস্ট এর জন্য। 
বাবা ও মায়ের পেশা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য বলা বা চেষ্টা করা 

অনেক ভাইবাতেই নিজের পরিবার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। যেমন আমি আমার ব্যক্তিগত ভাইবার কথা যদি বলি তবে সেখানে আমার পরিবারের সকল সদস্যের পেশা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি অবশ্য সকল তথ্যই ঠিকঠাক বলেছিলাম। আপনার বাবা ছোট কাজ করুক তারপরেও সেটা আপনাকে জানাতে হবে অকোপটে সেটা কোন ভাবেই লুকানো যাবে না। আপনার সম্পর্কে বা আপনার পরিবার সম্পর্কে যদি কোন তথ্য লুকানোর চেষ্টা করেন তবে সেটা পুলিশ ভেরিফিকেশানে ধরা পড়বে আর আপনি যে মিথ্যা বলেছেন সেটার জন্য তারা আপনাকে রিজেক্ট করতে পারে। আসলে পরীক্ষার জন্য একটা নাম্বার থাকে, ভাইবা দেওয়ার জন্য একটা নাম্বার থাকে আবার আপনাকে ভেরিফাই করার জন্যও একটা নাম্বার থাকে এসব মিলেই আপনাকে চাকরীতে নিয়োগ দিবে। আর সরকারী চাকরীর ক্ষেত্রে এসব তথ্য বের করা অনেক বেশি সহজ আপনার সম্পর্কে। 
সরকারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে আপনার ঠিকানা দেওয়া হলেই আপনার সম্পর্কে সকল তথ্য দুই দিনের মধ্যেই জানাবে। আর সকল তথ্য যদি মিল থাকে তারপরই আপনাকে জানাবে যদি আপনি সেই চাকরীটার যোগ্য হোন। অনেক সময় আমরা নিজেকে বড় দেখানোর জন্য অনেক তথ্যই লুকানোর চেষ্টা করি আর সেটা ভেরিফাই করার জন্য যখন পুলিশ বা লোকজন আসে তখন আপনার কথার সাথে তারা মিল না থাকার কারণে আপনাকে রিজেক্ট করে দেয়। 
কোন তথ্য না জানলেও তা বলার চেষ্টা করা
ধরুন আপনাকে পদ্মা সেতুর কত কিলোমিটার তা জিজ্ঞেস করেছে। আপনার সেই সময়ে মনে নেই তবে আপনি সরাসরি বলে দেবেন সরি স্যার আমি জানি না এর উত্তরটা। আসলে না জানাটা দোষের নই দোষের হলে না জেনেও জানার মত আচরণ করা। আর কোন কারণে যদি ভাইবাতে আপনি এমন কোন আচরণ করেন তবে আপানকে তারা হয়তো আরও বেশি কিছু প্রশ্ন করবে আপনার সম্পর্কে জানার জন্য। মনে রাখবেন ভাইবাতে যারা উপস্থিত থাকে মানে যারা আপনার ভাইবা নেন তাদের সবার কাছে আপনার সকল তথ্য থাকে আর তারা বিভিন্ন জন বিভিন্ন দায়িত্বে থাকেন। আপনি কোন তথ্য যদি ভুল দেন তবে আপনাকে তারা বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে বের করবে বা করার চেষ্টা করবে। 
নিজের সম্পর্কে সঠিক তথ্য না বলা 
এই বিষয়টা আমি আমার প্রথম ভাইবাতেই বুঝতে পেরেছিলাম। আর ভাইবা থেকে বের হয়েই আমি ঠিক করেছিলাম নিজের সম্পর্কে সকল তথ্যগুলো লিখে মুখস্ত বলার চেষ্টা করবো সবার আগের তারপর পরের ভাইবাতে যাবো। কারণ আমি আমার প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা ঠিক না দেওয়ার কারণে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েছিলাম। এমনকি ধমকের মত কথাও শুনেছিলাম। ভাইবা দেওয়ার আগে কমন একটা প্রশ্ন বলা হয়ে থাকে সকল ভাইবাতেই এই প্রশ্নটা ধরবে সেটা হলো Describe yourself two minutes ? বা আপনার সম্পর্কে মিনিট বলুন। প্রশ্নটা যদি বাংলায় হয় তবে আপনাকে বাংলায় বলতে হবে আর যদি প্রশ্নটা ইংরেজীতে হয় তবে আপনি অবশ্যই ইংরেজীতে উত্তর দেবেন। তবে এই কমন প্রশ্নটার উত্তর আগেই বাসায় বসে লিখে মুখস্ত করবেন তাতে আপনি অনেক দ্রুতই বলে দিতে পারবেন। 
অনেক সময় এই একটা প্রশ্নই ইংরেজীতে হয়ে থাকে। তবে পোস্ট বুঝে বাংলা ইংরেজীতে হয়ে থাকে। বড় পোস্ট হলে অবশ্যই ইংরেজীর বিষয়টা অনেক বেশি থাকবে আর ছোট পোস্ট হলে কম থাকবে। 
কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন ভাইবার জন্য ? 
আসলে বিষয়টা অনেক সহজ আবার অনেক কঠিন। কারণ হলো আমরা সাধারণত নিজেকে তৈরি করার পেছনে সময় ব্যয় করি না। যেমন ধরুন আয়নার সামনে দাড়িয়ে কি আপনি কখনও নিজেকে প্রশ্ন করেছেন আপনি কেন চাকরী করবেন ? আয়নার সামনে কি আপনি কখনও দাড়িয়ে নিজের দুইটা সমালোচনা করেছেন ? বা নিজের সম্পর্কে ৫টি বাক্য বলার চেষ্টা করেছেন ? আসলে আমরা নিজেরাই নিদের তৈরি করি না বা নিজেদের তৈরি করার জন্য সময় দেই না। এটা আমি নিজেও বুঝেছি আমার নিজের ভাইবা দিতে গিয়ে। আসলে অভিজ্ঞতার একটা বিষয় থাকে যেটা আপনার নিজেরও হবে আর তারজন্য আমি একটা পদ্ধতি বলি সেটা ভালো মনে মনে রাখলে আমার মনে হয় ভাইবার জন্য আপনাকে বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। 
(ক) নিজের সম্পর্কে ও নিজের এলাকা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে মুখস্ত করুন।
(খ) নিজের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
(গ) সাম্প্রতি জরুরী চলা বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। 
(ঘ) আপনার নিজের সাবজেক্ট সম্পর্কে জানুন। 
(ঙ) উপরের প্রশ্নগুলো লিখে বারবার নিজেকে বলে বলে তৈরি করুন। 
ধরুন আমি চারটা নিয়ম বললাম কিন্তু আপনাকে এর বাইরে প্রশ্ন ধরছে তবে আপনি জানেন না এটা সরাসরি সুন্দর করে জানাবেন। আর যদি জানা থাকে তবে সেটাও তাদেরকে বলবেন। কারণ আপনি চাকরীর জন্য পড়াশোনা করতে থাকলে অনেক ছোট ছোট বিষয় আপনি জানবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে উপরের বিষয়গুলোতে যেন কমতি না থাকে। আর প্রতিবার ভাইবা দেওয়ার পর কি কি পারেন নাই বা কি সমস্যার জন্য উত্তরগুলো ভালো হয় নাই সেটা লিখে পরেরবার যেন সেই সমস্যা না হয় সেটার দিকে নজর দেবেন। 
আশা করি লিখাটা থেকে কিছুটা ধারনা পাবেন ভাইবা সম্পর্কে। আসলে ভাইবাতে আপনার নিজেকে প্রকাশ করতে হবে আর যে যত ভালো নিজেকে প্রকাশ করতে পারবে সে তত ভালো করবে। অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্য। 

About ডিজিটাল আইটি সেবা

ডিজিটাল আইটি সেবা অনলাইন ভিত্তিক সেবা মূলক প্রতিষ্টান। এখানে অনলাইনে আয়, ডিজিটাল শিক্ষা, ফেইসবুক মার্কেটিং সহ আরও অনেক কাজের ধারণা প্রদান করা হয়। এটি দেশের আর্থিক সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে থাকে।

View all posts by ডিজিটাল আইটি সেবা →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *