ফ্রিল্যান্সারদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ৫টি টিপস
Table of Contents
আজকের আর্টিকেলটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা অনলাইন বা Online এ কাজ করে থাকেন তাদের জন্য। এখানে ফ্রিল্যান্সারদের স্বাস্থ্য নিয়ে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
আরো পড়ুন >> Best Freelancer বা ভালো ফ্রিল্যান্সারদের তিনটা গুণ
বর্তমান সময়ে প্রায়ই শোনা যায়, ফ্রিল্যান্সার বা Freelancer দের স্বাস্থের নানা ধরনের সমস্যা। ব্যাকপেইন বা Backpain, পেট বেড়ে যাওয়া, শরীরে মেদ জমে যাওয়া, চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে অনেক সমস্যা দেখা যায়।
আমরা চাইলেই এরকম সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারি। তার জন্য কিছু বিষয় আমাদেরকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। সেগুলোর মধ্য থেকে আমি সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ৫টি টিপস নিয়ে সাজিয়েছি আমাদের আজকের আর্টিকেল।
ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing কি ?
ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing মানেই হলো, মুক্ত পেশা। গতানুগতিক আপনি চাকরি করলে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আপনাকে অফিস করতে হয়। অথবা আমি সহজ করে বললে বলবো যে, ৯টা – ৫টা পর্যন্ত যেই চাকরি সেটা থেকে বের হয়ে নিজের ইচ্ছা মত সময় নিয়ে কাজ করার অন্যতম একটি পদ্ধতিকেই ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing বলা হয়ে থাকে।
আমি আশা করবো ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing কাকে বলে ? ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing কি ? ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing বলতে কি বোঝায় ? এসব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
এটা নিয়ে আরো বিস্তারিত আপনি গুগল বা Google এ সার্চ দিয়ে অথবা ইউটিউব বা YouTube এ সার্চ দিয়ে জেনে নিতে পারবেন।
এসব তথ্য এখন অনলাইনে হরহামেসায় দিয়ে দেয় অনেকেই। তবে আমাদেরকে অবশ্যই স্বাধীন এমন পেশা নির্বাচন করতে হবে যেই পেশাকে আমরা পছন্দ করি।
কারণ মানুষ পছন্দের কাজে বিরক্ত হয় না। ফ্রিল্যান্সারদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট এইটা।
ফ্রিল্যান্সারদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ৫টি টিপস
যারা অনলাইনে কাজ করে থাকেন তাদের শারীরিক সমস্যাগুলো এড়ানোর জন্য আমার পছন্দ বা অনেকেই বিষয়গুলো জানার পরেও মানেন না এমন ৫টি বিষয় নিয়েই আমি আলোচনা করবো এখানে।
১. ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing করার জন্য পছন্দের পেশা নির্বাচন করা।
২. কাজের উপর নির্ভর করে কম্পিউটার বা সেটআপ করা।
৩. কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার পরিকল্পনা করা।
৪. দৈনিক রুটিন অনুসারে কাজ করা।
৫. মানসিক সুস্থতার জন্য কাজের ফাকে ব্রেক নেওয়া।
আমি আরও কিছু বিষয় যুক্ত থাকলেও সবগুলোকেই এই ৫টি বিষয়ের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। ফ্রিল্যান্সারদের কে অবশ্যই এই সকল বিষয়গুলোকে বুঝতে হবে এবং জানতে হবে।
আমরা অনেকেই মনের করে থাকি অনলাইন মানেই টাকা আর টাকা।
আসলে বিষয়টা মোটেও এমন না। এখানে আপনি দক্ষতা দেখাতে পারলে অবশ্যই আপনি ভালো করতে পারবেন এবং আগামীতেও আপনি আরও ভালো কিছু করার জন্য অন্যদেরকে অনুপ্রেরণা দিতে পারবেন।
এ পর্যায়ে আমি উপরের দেওয়া ৫টি বিষয় থেকে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো সংক্ষিপ্ত আকারে। আশা করবো সবাই বুঝতে পারবেন যে, মাত্র ৫টি পয়েন্ট এ আমি কিভাবে সবগুলো বিষয়গুলোকে একসাথে করে নিয়েছি।
১. ফ্রিল্যান্সিং বা Freelancing করার জন্য পছন্দের পেশা নির্বাচন করা
Freelancing করার জন্য আপনাকে তিনটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন,
(ক) সঠিক পেশা বেছে নেওয়া।
(খ) সেটা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া এবং শেখা।
(গ) দক্ষতা চেক করে নিয়মিত ধৈর্য্যসহকারে কাজ করে যাওয়া।
ধরুন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং বা Digital Marketing টা ভালো বোঝেন। অথবা আপনি সোসিয়াল/সামাজিক মার্কেটিং বা Social Marketing টা ভালো বোঝেন। অথচ আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন বা Graphics Design এর কাজ শিখছেন।
এরকম হলে একটা সময় আপনার বোরিং চলে আসবে। কারণ মানুষ পছন্দের কাজে বিরক্ত হয় না। তাই আপনাকে অবশ্যই পেশাটা নির্বাচন করার সময় বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।
২. কাজের উপর নির্ভর করে কম্পিউটার বা সেটআপ করা
সেটআপ আপনি কি কাজ করবেন সেটার উপর নির্ভরশীল। যেমন, আপনি গ্রাফিক্স এর কাজ করার জন্য এক ধরনের কম্পিউটার বা ডিভাইস কিনবেন আবার ভিডিও ইডিটিং এর কাজের জন্য এক ধরনের ডিভাইস সেটআপ করবেন।
তারপরেও আমি বোঝার জন্য বিষয়টাকে এখানে বলার চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করবেন নিচের বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে সেটআপ করে নেওয়ার জন্য। যেমন,
(ক) মনিটর চেষ্টা করবেন বড় কেনার। যতটুকু সামর্থ্য তবে ১৪ ইঞ্চি না কেনাই বেস্ট।
(খ) পিসি ব্যবহার করবেন। মোবাইল দিয়ে অনেকেই বলে তবে সব কাজ হয় না বা জোর করে করাটাও ঠিক না।
(গ) Ram-8, SSD-120, i-3 or i-5, সাধারণ সেটআপ। তবে কাজের উপর নির্ভর কর পিসি তৈরি করবেন।
(ঘ) টেবিল এবং চেয়ার কিনে নিবেন আস্তে আস্তে। ভালো মানের টেবিল ও চেয়ার কাজের জন্য সুবিধা দেবে আপনাকে।
(ঙ) সময় দেখার জন্য পিসির ঘড়ি থাকার পরেও রুমে একটা ঘড়ি রাখবেন। এলার্ম দেয় বা সময় সেট করতে পারবেন এরকম হলে ভালো হয়।
আরও কিছু বিষয় থাকলেও এগুলো ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বেস্ট সেপআপ নরমাল এর মধ্যে।
৩. কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার পরিকল্পনা করা
যদিও কাজের জন্য একেবারেই নির্দিষ্ট জায়গা লাগে না। তবে আপনি নিয়মিত কাজ করার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা রাখবেন। যেখানের পরিবেশটা এমন ভাবে রাখবেন যেন, সেখানে গেলেই কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।
পড়াশোনার জন্য যেমন, আমরা চাকদিকে বই যুক্ত টেবিল রাখতাম বা টেবিলটাই এমন যেখানে বই আর বই সেরকম একটি রুম তৈরি করার চেষ্টা করবেন।
৪. দৈনিক রুটিন অনুসারে কাজ করা
অনলাইনের কাজের কোন টাইম টেবিল না থাকলেও আপনি একটা সময় তৈরি করবেন। শুরুর দিকে এতটা মেনে না চলে আপনি অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করে কাজ করার চেষ্টা করবেন।
আমি যদি আমার রুটিন এর কথা বলি তাহলে সামান্য ধারণা দেওয়ার জন্য বলতে হবে যে,
(ক) সকালে উঠবেন ফজরের আগে। নামায আদায় করে একটা বাইরের বাতাস নিবেন বা খোলা বাতাসে হাটবেন কিছু সময়।
(খ) তারপর কাজ শুরু করবেন।
(গ) চেষ্টা করবেন ৩০ মিনিট পর পর একটু উঠার। আবার বসবেন, রুমেই হাটলেন এমন।
(ঘ) এভাবে ৯টার আগেই সকালের নাস্তা এবং কাজ থাকলে সেটা করতে থাকবেন।
(ঙ) দুপুরের নামাযের পর খেয়ে ঘুমাবেন একটু। অনেকেই ঘুমান না বা ঘুম আসে না। অভ্যাস তৈরি করবেন। আর চাকরি থাকলে তো সেটা আলাদা কথা।
(চ) বিকেলের সময়টাতে নিজেকে সময় দিবেন। দিনের কিছু সময় নিজের জন্য রাখবেন সেটাই এই সময়টা।
(ছ) আসরের নামাযের পর থেকে মাগরিবের নামায পর্যন্ত আপনি হাটাহাটি করতে পারেন।
(জ) আবার মাগরিব থেকে ঈশার নামায পর্যন্ত কাজ করলেন।
(ঝ) ঈশার নামায আদায় করার পর রাতের খাবার খেয়ে নিবেন দ্রুতই।
(ঞ) রাত ১২টার পর যেন কোন কাজ না থাকে এমনভাবেই কাজ করবেন রাত ১২টা পর্যন্ত।
এভাবে আপনি আপনার মত করে রুটিন তৈরি করার চেষ্টা করবেন। আসলে রুটিন লাইফ ভালো কিছু করতে সহযোগীতা করবে আপনাকে।
৫. মানসিক সুস্থতার জন্য কাজের ফাকে ব্রেক নেওয়া
আমরা সপ্তাহে একটা দিন বিশেষ করে শুক্রবার কোথায় দূরে যেতে পারি। অনেকেই আছেন সরকারী চাকরিজীবিদের মত লাইফ লিড করে থাকেন। তারা শুক্রবার এবং শনিবার তেমন কোন প্রেসারের কাজ না করে ঘুরেন।
কাজের পাশাপাশিই আপনাকে নিজেকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এটাকে মানসিক শান্তির সময় হিসেবে রাখবেন।
শারীরিক সুস্থতা সবার আগে বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। ফ্রিল্যান্সারদের শারীরিক সমস্যা একবার হলে সেটা থেকে বের হওয়া কঠিন। তাই ফ্রিল্যান্সারদের উপরের বিষয়গুলোকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখার চেষ্টা করা উচিত বলে আমি মনে করি।
ফ্রিল্যান্সারদের স্বাস্থ্য আর্টিকেলটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৫ই আগস্ট ২০২২ সাল
One Comment on “ফ্রিল্যান্সারদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ৫টি টিপস”