টাকা পয়সা খরচের আগে জেনে নিন ৫টি বিষয়

মাসের শেষে গিয়ে টানাটানিতে পড়তে হয় ? আয়ের কত অংশ প্রয়োজনে ব্যয় করবেন আর কত অংশ বিনোদনের জন্য আর কত অংশ সঞ্চয় করবেন সেগুলো জানতে আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। 

Table of Contents

টাকা পয়সা খরচের আগে জেনে নিন ৫টি বিষয়



বেশিভাগ চাকুরীজীবিদের অবস্থাটা মাসের শুরুতে এক রকম থাকে আর শেষে আরেক রকম হয়। এর কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন সঠিক পরিকল্পনার অভাব। 



মাস শেষে টাকার হিসেব মেলে না কেন ? 

বেশিভাগ মানুষই আয় ও ব্যয়ের মধ্যে যে মিল থাকা দরকার সেটা রাখে না। অনেক সময় দেখা যায় আয়ের চাইতে ব্যয়টা অনেক বেশি যার কারণেই মাস শেষে টাকার হিসেব মেলে না বলে অনেক গবেষক মনে করেন। সায়েরা কামাল অথৈ যিনি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন তিনি মনে করেন, বছরের শুরুতেই আমরা অনেকেই একটা পরিকল্পনা করি না বা পুরো বছরের একটা টাইমলাইন তৈরি করি না। যার কারণেই অনেক সময় দেখা যায় মাস শেষে টাকার হিসেব মেলে না। 

মোহাম্মদ সোহেল মুস্তাফা (সহযোগী অধ্যাপক, বিআইবিএম) তিনি মনে করেন, শুরুতেই আমাদের নির্ধারিত করতে হবে কোনটা বিলাসিতা আর কোনটা প্রয়োজন। অনেক সময় আমরা প্রয়োজন আর বিলাসিতার পার্থক্য করতে পারিনা। পরে মাসের শেষে এসে আমরা হিমসিম খায়। 




কিভাবে আপনার আর্থিক ব্যবস্থপনা করবেন ?

অর্থ আয় করার পর কিভাবে সেই অর্থটা আমরা সঠিকভাবে ব্যয় করবো সেটা জানা অনেক জরুরী বিষয়। যেই অর্থটা আমরা আয় করছি তার সুষ্ঠ ব্যবস্থপনার জন্য পাঁচটা জিনিস মানতে হবে। যেগুলো হলোঃ 

(ক) আয়ের উৎস নির্ধারণ 

আপনাকে ব্যয় করার আগে সেই ব্যয়িত অর্থ আয় করার একটা ভালো উৎস অবশ্যই খুজে নিতে হবে। কারণ শুধু ব্যয় করলে বর্তমানে সমস্যা না মনে হলেও আপনি দীর্ঘমেয়াদীতে সমস্যায় পড়বেন বলে ধারণা করা হয়। তাই আপনি ব্যয় করার আগে আয় করার ভালো একটা উৎস নির্ধারণ করবেন। 





(খ) ব্যয়ের উৎস নির্ধারণ 

কোন কোন কাজে ব্যয় করবেন আমি উপরে কিছু ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করে দিয়েছে কোন খাতে কতটুকু ব্যয় করতে হবে সেটার একটা প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আর্টিকেলটিতে আপনি  এটা অনুসরণ করতে পারেন। আবার আপনি আপনার নিজের মত করে ব্যয় করার একটা উৎস বা ক্ষেত্র নির্ধারণ করে রাখবেন। 

(গ) সঞ্চয়ের পরিমাণ নির্ধারণ 

আপনার আয় ও ব্যয় এর পরিমানের উপর ভিত্তি করে অবশ্যই সঞ্চয় এর পরিমাণ ও সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করবেন। অনেক সময় আমরা সঞ্চয় নিয়মিত করতে পারি না যেটার জন্য আপনি সরকারী কোন খাতে দীর্ঘমেয়াদীতে বিনিযোগ করেও রাখতে পারেন। 

(ঘ) সঞ্চয়কে বিনিয়োগে রূপান্তর 

সঞ্চয় এর পরিমাণের উপর নির্ভর করে আপনি নিজের সঞ্চিত অর্থকে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করবেন। এটা হতে পারে যৌথ বিনিয়োগ বা যেটাতে রিক্স কম সেটাতে আপনি বিনিয়োগ করতে পারেন। মনে রাখবেন বিনিয়োগ ছাড়া আপনার সঞ্চয় কখনই বাড়বে না। 

(ঙ) ঝুঁকি মোকাবেলায় সঞ্চয় করা 

ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোবাবেলার উদ্দ্যেশ্যেই আপনাকে সঞ্চয় করার মানুসিকতা রাখতে হবে। অনেক সময় আমরা সঞ্চয় করার কোন সঠিক কারণ খুজে পায় না আর অনেকেই এই জন্য সঞ্চয়ও করে না। তারা এটা ভাবে না আজকের সময়টা হয়তো আগামী বছর এমন থাকবে না। তাই ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্য সঞ্চয় করা অনেক জরুরী একটা বিষয়। 

কারো আয় যদি হয় ধরুন ১০০ টাকা তাহলে সে তার ৫০% অর্থ নিজের বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যয় করবে। শতকরা ৩০ ভাগ আপনি ব্যয় করতে পারেন বিনোদন বা ভ্রমণের জন্য। কিন্তু শতকরা ২০ ভাগ বা তার বেশি সঞ্চয় করতে হবে। আমি আমার আয়ের পুরোটা খরচ করে ফেলতে পারবো না, আর্থিকভাবে এটা টেকসই নয়। 



জীবন মান উন্নয়নে বিনিয়োগ করুন 

পারিবারিক খরচ এবং সঞ্চয়ের পর সাধারণত একটা মানুষ বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করতে পারে তার সঞ্চিত অর্থ থেকে কিছু টাকা। অনেকেই আবার একদম ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করাকে গুরুত্ব দেয়। অনেকেই আবার একটু সামান্য ঝুকি নিয়ে ভালো কোন কম্পানির লাইফ ইনস্যুরেন্স কিনে থাকেন। অনেকেই আবার বেশি ঝুঁকির জন্য যেমন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে থাকেন। 

অনেক সময় আমাদের দেশে  বিভিন্ন এলাকা ভেদে কমপক্ষে ২০০ টাকায়ও পেনশন ডিপোজিড স্কিম চালু আছে যেটা আপনি করতে পারেন ভবিষ্যতের জন্য। তবে ৫০০ টাকা প্রতি মাসে ডিপোজিট করে রাখতে পারেন। যেখানে আপনার এক বছরে ৬ হাজার টাকা জমা হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হবে মুনাফা যেটা হয়তো অনেকেই নিরাপদ বিনিযোগ হিসেবে মনে করে থাকেন। বিনিযোগের টাকা দিয়ে কিন্তু সংসার চলার কথা না। বিনিয়োগের মূল উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে জীবন মান উন্নয়ন করা। 



অযথা ঋণ নেওয়া এড়িয়ে চলতে হবে 

আমরা অনেকেই জানি না আসলে, আমাদের ঋণ কেন দরকার ? আর কোন সময়ে আমাদের ঋণ নিতে হবে ? আমরা কী অর্জনের জন্য ঋণ নিচ্ছি সেটা কিন্তু প্রথমেই আমাদের পরিকল্পনায় থাকতে হবে। যাদের ক্রেডিট কার্ড আছে তাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে যে, কেন আমরা এটি ব্যবহার করছি। আপনি কি জরুরী প্রয়োজনের জন্য ক্রেডিট কার্ড রাখছেন নাকি ক্রেডিট কার্ডের কারণে আপনার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। প্রয়োজন এবং অপ্রয়োজন এই দুইটার মধ্যে যদি আপনি পার্থক্য করতে না পারেন তবে আয় ও ব্যয় করার হিসেব করাটা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। 



সবশেষে বলবো >>

আমি উপরের আর্টিকেলটিতে আমাদের অনেক প্রযোজনীয় একটা বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা অনেক সময় এই বিষয়ে কোন পরামর্শ পায় না যেটা অনেক জরুরী। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাকে আপনার অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করার ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

About ডিজিটাল আইটি সেবা

ডিজিটাল আইটি সেবা অনলাইন ভিত্তিক সেবা মূলক প্রতিষ্টান। এখানে অনলাইনে আয়, ডিজিটাল শিক্ষা, ফেইসবুক মার্কেটিং সহ আরও অনেক কাজের ধারণা প্রদান করা হয়। এটি দেশের আর্থিক সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে থাকে।

View all posts by ডিজিটাল আইটি সেবা →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *