করোনার কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আসছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে করোনার প্রথম থেকেই অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেছিল। আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য অনলাইনে পাঠদানের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকারিভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
করোনা পরবর্তী শিক্ষাস্থাটাকে কেমন হবে তা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন কথা থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে করোনার পরে শিক্ষা ব্যবস্থাটা অনেক পরিবর্তিত হবে।
আরো পড়ুন >> করোনা পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থা পাঠ ১
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি বলেন, “ শিক্ষাকে আনন্দময় করার জন্য শিগগিরই শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনা হবে।” শিক্ষাব্যবস্থা অধিকাংশই পরীক্ষা নির্ভর হয়েছিল। বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে পরীক্ষা না নিয়ে ফলাফল ঘোষণার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।পরিবর্তনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
(১) এসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু করা।
(২) অনলাইনে ক্লাস করা এবং পরীক্ষা দেওয়া।
(৩) অনলাইনের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করা।
(৪)শিক্ষাব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করা।
(৫) পরীক্ষা নির্ভরশীলতা কমানো।
করোনা পরবর্তী বিশ্ব শিক্ষাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেখবে
করোনার কারণে সকল সেক্টরই ক্ষতিগ্রস্থ। তারমধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রটা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বেশিরভাগ স্কুলগুলো এখন অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছে। সবাই ক্লাসে অংশ নিতে পারছে কিনা সে বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিশেষ নজরদারি দিচ্ছে। করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে এত পরিবর্তিত হবে যেটা আমাদের চিন্তার বাইরে।
(১) এখন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে জুম অ্যাপস এর মাধ্যমে। অনেকেই ফেসবুক লাইভ এর মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছে। ক্লাসগুলো অনলাইন থেকে তাদের নিজ নিজ ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় অংশটুকু দেখে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারছে। তবে গ্রামের শিক্ষার্থীরা অনলাইনের বাইরে থাকায় শতভাগ শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
(২) শিক্ষকরা পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে তাদের লেকচার তৈরি করছেন। অনলাইনে ক্লাসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ক্লাস গুলো সংরক্ষন করা থাকে অনলাইনের মাধ্যমে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজন মত ব্যাবহার করতে পারছে।
(৩) বিদ্যালয়ের ফিগুলো অনলাইনের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। অনলাইন ব্যাংকিং আগে থেকেই চালু থাকার ফলে এই সুবিধা সকল স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারছে।
(৪) অনেক বিদ্যালয় তাদের তাদের ক্লাসগুলো আগে থেকে রেকর্ড করে ফেসবুক ইউটিউব এর মাধ্যমে নিচ্ছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্লাসগুলো বেশি বোধগম্য হচ্ছে।
(৫) ক্লাবগুলো অনলাইনে নেওয়ার ফলে অনেক বেশি তথ্য জানানো সম্ভব হচ্ছে। শিক্ষকরা আগে থেকেই তাদের লেকচার তৈরি করার ফলে যখন লেকচার দিচ্ছেন তখন তথ্যগুলো অনেক ভালো ভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন।
(৬) করোনার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিদ্যালয় অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখবে বলেও জানা গেছে। ক্লাসগুলো অনলাইনে থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে অনেক বেশি সহযোগী হচ্ছে।
অনেক শিক্ষার্থী এই পরিবর্তনকে ভালো মনে করছেন। আবার অনেকেই এই পদ্ধতিকে মন্দ হিসেবে বিবেচনা করছেন। অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সময়ই বলে দেবে। ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য না হওয়ার কারণে অনেকেই এই পদ্ধতিকে ভালো মনে করছেন না।
যদিও শহরের শিক্ষা ব্যবস্থায় কোন সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু গ্রামে শিক্ষাব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ গ্রামগুলো এখনো ইন্টারনেট সেবার মধ্যে আসে নাই। তাছাড়াও ইন্টারনেটের মূল্য অনেক সময় শিক্ষার্থীদের এই সেবা গ্রহণে বাধা গ্রস্থ মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকার আমাদের দেশের ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে দিলে এই সেবার মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্র টাকে চালিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ইন্টারনেট প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়টি সরকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় শিক্ষাক্ষেত্রে কারও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ?
বিবিসি বাংলা থেকে বলা হয়েছে যে, করোনা মহামারী সময় শিক্ষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না। যদিও বেসরকারি শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষকরা দিনযাপন করছেন অনেক কষ্টের মাধ্যমে। এক জরিপে দেখা গেছে শিক্ষকরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হওয়ার চেষ্টা করছেন।
যার ফলে গবেষকরা মনে করছেন করো না পরবর্তী সময়ে শিক্ষকদের সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে। এটিকে শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসেবে মনে করছেন তারা। তবে অনলাইন কার্যক্রম চালানোর থাকার ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা বেশি সমস্যা হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
অনেক শিক্ষক শিক্ষকতা পেশাকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির চাকরিও ব্যবসা ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন পত্রিকায় ছোট ছোট বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়েও বলা হয়েছে। করণা মহামারীর সময়ে বিভিন্ন সেক্টর সরকারের সহযোগিতা পেলে ও শিক্ষা সেক্টর সরকারের কোন সহযোগিতায় পায় নাই।